বর্ষবরণের রাতে বাজির রমরমা দেখা গিয়েছে শহর কলকাতায়। সবরকম চেষ্টা করার পরেও শব্দবাজি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ পুলিশ প্রশাসন, তা আরও একবার প্রমাণ হল মঙ্গলবার রাতে। তবে সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হল, এই শব্দবাজিই প্রাণ কাড়ল এক অবলার।
পেশায় ফিল্ম এডিটর অমিত দেবনাথ। আর তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি রায় অভিনেত্রী। চরিত্রাভিনেতা হিসেবে কাজ করেছেন বহু সিরিয়ালে। শর্মিলা ঠাকুর এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত অভিনীত ‘পুরাতন’ ছবিতেও রয়েছেন তিনি। তাঁদের পোষ্যর নাম ছিল লুডো। সেই লুডোই অকালে মারা গেল শুধুমাত্র শব্দ বাজির আওয়াজে। খবর জানার পর থেকে, রীতিমতো প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে তারকারা।
আরও পড়ুন: নিউ ইয়ারে ১ ঘণ্টায় ২০০০ টিকিট বিক্রি খাদানের! বক্স অফিসে ১২ দিনে সন্তানের আয় কত
অমিত দেবনাথ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমাদের লুডো গান শুনতে ভালোবাসতো। মিষ্টি শব্দগুলো যেন তার হৃদয়ের গান ছিল। মাত্র ২০ দিন বয়সে আমাদের ঘরে এসেছিলো সে। আমাদের ছোট্ট লুডো, মাত্র ১৮ মাসের এক পাখি, তবে তার প্রাণের উষ্ণতা আর ভালোবাসায় কোনো কমতি ছিল না। মানুষ নয়, কিন্তু মানুষকেও যেন ওর ভালোবাসার আলোয় ভরিয়ে দিত। কারও ক্ষতি চায়নি কখনো। আদরে ভিজে থাকতেই বেশি পছন্দ করতো। ওর কোনো খাঁচা ছিলো না। কাঁধে, কোলে বা জামার মধ্যে করে সব জায়গায় ঘুরে বেড়াতো আামাদের সাথে সাথেই। রাতে বিছানায় চাদরের তলায় ঘুমোতো বাচ্চাটা। কিন্তু বাজির শব্দ সহ্য করতে পারতো না লুডো। যখন বাইরের মানুষ আনন্দে বাজি ফাটাতো, লুডো ভয়ে কেঁপে উঠতো। তখন ছুটে গিয়ে বৃষ্টির কোলে লুকিয়ে পড়তো। বৃষ্টি যতটা পারতো আগলে রাখতো ওকে। তবুও, মানুষের আনন্দের এই নিষ্ঠুর শব্দ ছোট্ট লুডোর মতো নিষ্পাপ প্রাণীদের জন্য অসহনীয় কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অবশেষে সেই বাজির তীব্র শব্দেই চলে গেলো আমাদের আদরের লুডো। ওর ছোট্ট হৃদয় এত ভার নিতে পারলো না।’

এদিকে লাইভে আসেন বৃষ্টি। কান্নায় রীতিমতো ভেঙে পড়েছেন তিনি। অভিনেত্রীকে বলতে শোনা গেল, ‘গুগল বলছে সানকুনুরা (লুডো যে প্রজাতির পাখি ছিল) ২৫-৩০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচে। আমার বাচ্চাটা হার্টফেল করে চলে গেল। মানুষের বাচ্চা নয়, তাই অভিযোগ জানাতে পারব না।’
আরও পড়ুন: কোজি কর্নার থেকে প্রভু জগন্নাথ, নিজের 3BHK ফ্ল্যাট ঘুরিয়ে দেখালেন ইমন, রয়েছে ব্যালকনিতে ছোট্ট বাগানও
অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী লুডো ও অমিতের ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘Absolutely not done!!!!!!!! শব্দবাজি ছাড়া মজা করা যায় না? আনন্দ করা যায় না?? এত দরিদ্র আমরা? কিছু বলার নেই!’