শুধু নামী গায়ক নয়, ব্যক্তিত্বের দিক থেকেও হাসিখুশি মানুষ ছিলেন কিশোর কুমার। লোকজনের সঙ্গেও ঠাট্টা-তামাশা করতেন তিনি। তবে আবার তাঁর কিছু কীর্তিকলাপের কারণেও লোকজন তাঁকে খামখেয়ালি মানুষের তকমা দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, জানা যায়, কিশোর কুমার নাকি তাঁর বাড়িতে কঙ্কাল ও মাথার খুলি রাখতেন।
কী চমকে উঠলেন তো?
তবে একথা এক্কেবারে সত্যি। একবার গায়কের কঙ্কাল ও মাথার খুলি রাখার বিষয়টি খবরের শিরোনামেও উঠে এসেছিল। সম্প্রতি ভিকি লালওয়ানিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেবিষয়েই মুখ খুলেছেন কিশোর কুমারের ছেলে অমিত কুমার। তিনি নিজের মুখেই জানিয়েছেন, কেন তাঁর বাবা বাড়িতে মাথার খুলি রাখতেন। অমিত বলেন, এই কারণে লোকজন বাবাকে পাগল ভেবেছিল, তবে বাবা এসব পাত্তা দিতেন না।
অমিত কুমারকে প্রশ্ন করা হয়, তাঁর বাবা কি কিছু লোকজনকে ভয় দেখানোর জন্য মাথার খুলি, হাড়গোড়, কঙ্কাল, এসব রাখতেন? অমিত জানান, তাঁদের বাড়িতে মাথার খুলি রয়েছে, যদিও সেটা কাউকে ভয় দেখানোর জন্য নয়। তিনি বলেন, 'ওগুলো আমরাই এনেছিলাম। আমরা পূর্ব আফ্রিকার নাইরোবিতে শো করতে গিয়েছিলাম। বাবার শখ ছিল এইরকম অ্যান্টিক টাইপের (প্রাচীন জিনিসপত্র সংগ্রহ করা) জিনিস সংগ্রহ করা। ফেরার পথে আমরা এগুলো নিয়ে এসেছিলাম, ওগুলো এখন ট্রাস্টের কাছে আছে।'
অমিত জানান, তাঁর বাবা আফ্রিকান সংস্কৃতি, মিউজিক পছন্দ করতেন। তাঁর গানে বিশ্ব সংস্কৃতিরও প্রতিফলন ঘটেছে।
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তাঁর বাবার ভাবমূর্তি নিয়েও কথা হত, অনেকে তাঁকে অহংকারী মানুষ বলতেন। অমিত এবিষয়ে বলেন, এগুলো সবই গুজব। উনি নিজেই নিজেকে নিয়ে মজা করতেন। বাবা (কিশোর কুমার) বলতেন, ‘আচ্ছা, পৃথিবী আমাকে পাগল বলে, আমি নিজেও তো বলি, এই পৃথিবী পাগল। যে আমাকে পাগল বলে, তাঁদের বলতে দাও, এটা খারাপ কিছু নয়।’ অমিত কুমারের কথায়, তাঁর বাবা ভাবতেন সবাইকেই একদিন এই কঙ্কালের মতো হয়ে যেতে হবে।'
অমিত কুমার চলচ্চিত্র প্রযোজক এসডি নারাং-এর সঙ্গে তাঁর বাবার এক সাক্ষাতের গল্পও বলেছেন। কিশোর কুমারের সম্পর্কে অদ্ভত সব গল্প শুনে নারাং একবার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বারবার মেঝেতে পা ঠুকছিলেন। কিশোর কুমার বিভ্রান্ত হয়ে জিগ্গেস করলেন কেন তিনি এটা করছেন। এর উত্তরে নারাং বলেন, ‘আমি শুনেছি তুমি এই মেঝেটা তৈরি করেছো যা খুলে যায় এবং মানুষ ভিতরে পড়ে যায়... এটা একটা ফাঁদের দরজার মতো।’ একথা শুনেই কিশোর কুমার হাসিতে ফেটে পড়লেন। এবং তাঁরে বলেন, ‘অ্যাইসা কুছ ভি নহি হ্যায় (এমন কিছু নেই)।’