ভারতীয় সিনেমায় প্রথম সারির নায়ক ও নায়িকাদের মধ্যেকার বয়সের ব্যবধান বরাবরই চর্চায় চলে আসে। যখন দেখা যায় সলমন-শাহরুখ-অক্ষয়দের নায়িকা হচ্ছেন হাঁটুর বয়সী নায়িকারা। যদিও এটা কোনো নতুন ট্রেন্ড নয়। বহুদিন ধরেই হয়ে আসছে। সম্ভবত এর সবচেয়ে চমকপ্রদ উদাহরণটি হল ১৯৭৯ সালের একটি সিনেমা, যেখানে এক অভিনেতা একটি মেয়ের দাদুর চরিত্রে অভিনয় করেন। এর কয়েকবছর পর সেই মেয়েটির সঙ্গেই পর্দায় রোম্যান্স করেন।
শ্রীদেবী ভারতীয় সিনেমার অন্যতম সফল এবং প্রভাবশালী তারকা। যদিও অনেকে তাঁকে ৮০ এবং ৯০ এর দশকের শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রী হিসাবে স্মরণ করে। তবে তাঁর কেকরিয়ার শুরু হয় ৬০ এর দশকে শিশু শিল্পী হিসাবে। সেই সময়, প্রাথমিকভাবে তামিল এবং তেলুগু চলচ্চিত্রে কাজ করেছিলেন। ১৯৭২ সালে ৯ বছর বয়সে তিনি বড়ি পান্থুলু (Badi Panthulu) সিনেমায় অভিনয় করেন। তেলুগু সুপারস্টার এনটি রামা রাও (N. T. Rama Rao)- যিনি এনটিআর নামে পরিচিত- ছবিতে তাঁর দাদুর চরিত্রে অভিনয় করেন।
আর এরপর ১৯৭৮ সালে 'পদারেল্লা ভায়াসুর' ছবির মাধ্যমে মুখ্য চরিত্রে পা রাখেন শ্রীদেবী। পরের বছর, ১৬ বছর বয়সে, তিনি ভেটাগাড়ুতে (Vetagaadu) এনটিআরের নায়িকা হয়ে আসেন রুপোলি পর্দাতে। ৫৬ বছর বয়সী এই সুপারস্টার শ্রীদেবীর চেয়ে ৪০ বছরের বড় ছিলেন, যা ভারতীয় সিনেমায় সবচেয়ে বিস্ময়কর বয়সের ব্যবধানের হিসেবে ধরা হয়। আর সবচেয়ে বড় কথা, এই সিনেমা একেবারেই কোনো অসমবয়সের দাম্পত্যের গল্প ছিল না! মাত্র সাত বছর আগে দাদু-নাতনি থেকে স্বামী-স্ত্রী, যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিল দর্শকদের।

এনটিআর এবং শ্রীদেবী
এনটিআরকে তেলুগু সিনেমার অন্যতম বড় সুপারস্টার হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তিন দশক ধরে রুপালি পর্দায় রাজত্ব করার পর, তিনি রাজনীতির জন্য সিনেমা ছেড়ে দেন এবং তিন মেয়াদে অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে ৭২ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
শ্রীদেবী ৮০ এর দশকে বলিউডে এসেছিলেন দক্ষিণের সফল কেরিয়ারের পর এবং ৯০ এর দশকে, দেশের শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রী হিসাবে রাজত্ব করেছিলেন। তবে দুই সন্তানের জন্মের পর তিনি কেরিয়ার থেকে বিরতি নেন। লম্বা সময় পর, তিনি ২০০৯ সালে সিনেমার জগতে ফিরে আসেন। তবে ২০১৮ সালে তাঁর অকালমৃত্যুর সঙ্গেই তাঁর কর্মজীবনও শেষ হয়ে যায়। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৪ বছর।