স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিকে এবার বড় মোড় আসতে চলছে। ‘শুভলক্ষ্মী’ ও ‘আদৃত’ আমেরিকাতে তাঁদের সব সম্পত্তি হারিয়েছে 'মোহনা'র ষড়যন্ত্রে। তাই তারা আমেরিকা থেকে ফিরে এসেছে স্বদেশে। এবার হবে তাদের 'গৃহপ্রবেশ'। আর সেই গৃহপ্রবেশ ঘিরে সকলে মাতবে উৎসবে। সেই উৎসবে কী কী চমক থাকবে? তা দেখতেই হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা পৌঁছে গিয়েছিল মেগার সেটে।
মেগার সেটে সাজো সাজো রব, কারণ সেখানে উৎসবের গৃহে প্রবেশ। ‘গৃহপ্রবেশ’ মানেই তো বাড়িতে অতিথি সমাগম। তাই ‘শুভলক্ষ্মী’ ও ‘আদৃত’-এর নতুন বাড়িতেও সারাদিন জুড়ে লেগেছিল অতিথির আনাগোনা। সেখানে গিয়ে প্রথমেই দেখা মেলে অনন্যা চক্রবর্তীর।
তিনি এদিনের অনুষ্ঠানে রায় পরিবারের অতিথি। কিন্তু রায় পরিবার কীভাবে তাঁর আপ্যায়ন করছে? তা জানতে চাইলে অনন্যা বলেন, ‘এসে থেকেই প্রচুর খাওয়া দাওয়া হচ্ছে। মাংস থেকে মিষ্টি আরও নানা বাঙালি সব পদ। সবটা নিয়ে জমজমাট।’ কিন্তু অনন্যা মানেই তো গান। তিনি কী কী গান গাইলেন? প্রশ্নে গায়িকা বলেন ,'আমি বিশেষত লোকসঙ্গীত গেয়েছি, তার সঙ্গে রবীন্দ্রসঙ্গীতও গেয়েছি। তবে কী কী গান গেয়েছি তা জানতে হলে দেখতে হবে এই বিশেষ পর্ব।
এরপরই দেখা মেলে 'মোহনা'র এবার আদৃতের পথ অনুসরণ করে সেও এসে হাজির হয়েছে ভারতে। সে জানায় এবার সে মূলত 'শুভলক্ষ্মী'কে সারপ্রাইজ দিতে এসেছে। কিন্তু মোহনা সারপ্রাইজ মানে তো তা শুভলক্ষ্মীর জন্য বিপদের। এই প্রসঙ্গে ‘মোহনা’ বলে, ‘শুভলক্ষ্মী আর দর্শকদের জন্য বড় সারপ্রাইজ আসছে। এত বড় করে শুভলক্ষ্মী গৃহপ্রবেশ করছে। মোহনা সেখানে ছোট্ট একটা উপহার দিতে চায়। (তার ঠোঁটে তখন লেগেছিল দুষ্টু হাসি)’
তবে পর্দার মোহনা এই দুষ্টুমীতে আনন্দ পেলেও বাস্তবে কৌশাম্বী তা মোটেই পায় না। তাই সে মোহনাকে ঠান্ডা হওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে মোহনা যাই করুক, কৌশাম্বী কীভাবে এই উৎসবে মেতে উঠেছেন? সেই প্রসঙ্গে নায়িকা বলেন, ‘অনেক শিল্পীরা এসেছেন। সকলের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বিশেষ অতিথি হিসেবে হাজির ছিলেন অদিতি মুন্সী, কাঞ্চন মল্লিক ও লেডি সুপারস্টার শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁদের সকলের সঙ্গে নাচ, গান, দারুণ মজা হচ্ছে।’
এরপরই দেখা মেলে ‘শুভলক্ষ্মী-আদৃত’-এর। তাদের বাড়ি জুড়ে সবটাই শুভ শুভ কারণ সেখানে শুভশ্রী আর শুভলক্ষ্মী এক হতে চলেছে। সেই প্রসঙ্গে পর্দার ‘শুভ’ অর্থাৎ উষসী বলেন, ‘সবটা মিলিয়ে ভীষণ ভালো লাগছে।’ তবে সকাল থেকে অতিথি আপ্যায়ন করতে করতে তাঁদের বেশ ক্লান্ত দেখাচ্ছি। এই কথা উঠতেই উষসী বলেন, ‘এখন ফ্লোরে নেই বলে একটু হয়তো ক্লান্ত দেখাচ্ছে, কিন্তু অ্যাকশন শুনলেই আমাদের ভিতরের সব এনার্জি বেরিয়ে আসবে।’ তাঁর কথার রেশ ধরেই পর্দার আদৃত সুস্মিত বলেন, ‘একদমই, আজ ফ্লোরের বিষয়টাই আলাদা। আজ বাইরে থেকে এত অতিথি এসেছেন। অনেক দিন পর ফ্লোর জুড়ে পজেটিভিটি।’ তবে তিনি এই কথা বলতেই উষসী আপত্তি জানিয়ে বলেন, ‘রোজই আমাদের ফ্লোরে পজেটিভ ভাইভ থাকে।’ সেই সূত্র ধরেই সুস্মিত বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি গল্পের পরিপ্রেক্ষিতে বলছিলাম। না হলে সত্যি আমাদের মধ্যে যথেষ্ঠ ইতিবাচকতা থাকে। এটা শুরু থেকেই।’
আর এরপরই 'শুভ'র বাড়ি শুভর পা পড়ে। অর্থাৎ দেখা মেলে শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের। তবে তিনি কেবল এদিনের অতিথি নন তিনি মেগার প্রযোজকও বটে। এই বিশেষ অনুষ্ঠান নিয়ে তাই নায়িকাও যথেষ্ঠ উৎসাহী। তাঁর কথায়,'এই সবে সেটে এলাম। আজ আমি খুবই আনন্দিত। ওরা এত দিন নিউইয়র্ককে থাকত। এবার সকলে কলকাতায় ফিরল। তাই আজ আমার এখানে আসা। গৃহপ্রবেশ আমার অনেকটা জুড়ে আছে। আমি যখন আমার ছবির প্রোমোশান করতাম, তখন অনেকে ভাবত আমি বুঝি আমার মেগার প্রচার করছি। আজ এই সেটটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। অনেক চমক আসছে। আমার পরিবারের সকলে এই গৃহপ্রবেশ দেখেন। আমি নিজের সময় মতো ওটিটিতে দেখি।'
কিন্তু নায়িকার কাছে গৃহপ্রবেশ মানে কী? শুভশ্রীর কথায়, ‘আমার কাছে গৃহপ্রবেশ মানে বাড়ির প্রত্যেকটি মানুষ যেভাবে অপেক্ষা করে থাকে সেই অপেক্ষারত মুখগুলোর কাছে দিনের শেষে ফিরে যাওয়া আমার কাছে গৃহপ্রবেশ। আমার সন্তানরা আমাকে যখন মা বলে জড়িয়ে ধরে সেটা আমার কাছে দিনের সব থেকে বিশেষ সময়।’
তবে এদিন কেবল শুভশ্রী একা নন, তাঁর স্বামী রাজ চক্রবর্তীও হাজির ছিলেন। তিনি জানান শুভশ্রী বেশ কড়া প্রযোজক। রাজের কথায়, ‘প্রযোজক আজ দেখতে এসেছে যে ঠিক ভাবে সব কাজ হচ্ছে কিনা। কারণ আমাকে প্রতিদিন এখানে দেখতে পাঠায়, এখানে ঠিক ভাবে কাজ হচ্ছে কিনা, লাভ হচ্ছে কিনা (যদিও লাভের কথাটা বেশ মজা করেই বলেন তিনি)।’ তিনি মজার ছলে আরও বলেন, ‘শুভশ্রী খুবই কড়া প্রযোজক, বাড়ি ঢোকার সময় বলে, আগে কত লাভ হল আমাকে দেখাও। যদি দেখে যে লাভ হয়েছে তাহলে বলে ‘এসো’, আর নাহলে বলে ‘যাও লাভ করে নিয়ে এসো’।’
তাঁর এই কথার রেশ ধরেই শুভশ্রীকে প্রশ্ন করা হয় তিনি কি সত্যি এত কড়া? এই প্রশ্নে নায়িকাও মজার ছলে জবাব দেন, ‘সেটাই কী খুব স্বাভাবিক নয়।’ তবে তারপর প্রযোজক শুভশ্রী বলেন, ‘কিন্তু আমি আবার সকলে স্বাচ্ছ্বন্দ্যের সঙ্গে কাজ করতে পারছে কিনা সেদিকেও খেয়াল রাখি।’
এরপরই নায়িকা ব্যস্ত হয়ে পড়েন শ্যুটিংয়ে। আর অন্যদিকে, পরিচালকের ভূমিকায় মাইক হাতে দেখা মেলে রাজেরও। সবটা মিলিয়ে বেশ জমজমাট একটা বিষয়। তাঁরা ছাড়াও স্টার জলসার 'রানী', দীপারাও হাজির ছিলেন এই উৎসবে। এই উৎসবের ডালি সাজিয়ে খুব তাড়াতাড়ি নতুন রূপে আসছে গৃহপ্রবেশ। এর স্বাদ দর্শকরা বাড়ি থেকে বসেই পাবেন। কারণ আগামী ১০ অগস্ট রাত সাড়ে ৯ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত তাঁরাও রায় পরিবারের সঙ্গে 'উৎসবের গৃহে প্রবেশে' সামিল হয়ে জমজমাটি এই উৎসবের আনন্দ নিতে পারবেন।