
Betvisa
6.88% Weekly Cashback on 2025 IPL Sports
সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটকদের আগে যে সকল মহারথীরা বাংলা ছবিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলন, তাঁদের অন্যতম দেবকী বসু। তাঁর একমাত্র সন্তান দেব কুমার বসুও বাবার পদচিহ্ন অনুসরণ করে হয়েছিলেন ছবিওয়ালা। তবে বাবার সেটি না-পসন্দ ছিল। সেই কারণেই বাংলা নয়, অসমিয়া ছবি দিয়ে হাতেখড়ি তাঁর। প্রথম ছবি ‘সংগ্রাম’ সুপারহিট হলেও পরের ছবি ‘শেষ বিচার’ মুখ থুবড়ে পড়ে। মন খারাপ হলেও হাল ছাড়েননি।
তবে শুক্রবার সব দেনা-পাওনা চুকিয়ে না-ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন দেব কুমার বসু। বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। এদিন এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর মৃ্ত্যু সংবাদ নিশ্চিত করে প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানান সমস্যায় ভুগছিলেন নবতিপর পরিচালক। অসুস্থতার জেরেই হাসপাতালে ভর্তি হন, তবে শেষরক্ষা হয়নি।
এদিন মুদিয়ালির বাসভবনে দুপুরে তাঁর মরদেহ শেষ শ্রদ্ধার জন্য শায়িত রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার চলে গিয়েছেন বাংলা সিনেমা তথা মঞ্চের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী দেবরাজ রায়। এর মাঝেই ফের মৃত্যুশোক।
বাবার সঙ্গে তুলনা এড়াতেই বাংলা ছবিতে হাত পাকাননি দেব কুমার বসু। তবে বাংলা টেলিভিশনকে তিনি উপহার দিয়েছিলেন ‘বিবাহ অভিযান’। যা বাংলা টেলিভিশনের এক যুগান্তকারী সিরিজ বলেই বিবেচিত। এই ধারাবাহিকের হাত ধরেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেন শঙ্কর চক্রবর্তী, শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, জয় বদলানিরা। পরিচালকের অসুস্থতার খবর পেয়েছে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন শঙ্কর। বয়সের ভারে সে-ভাবে কাউকে চিনতে না-পারলেও শঙ্করকে চিনতে পেরেছিলেন। সেই স্মৃতিতে মনভার তাঁর। এইসময়কে অভিনেতা জানান, 'কিছুদিন আগেও দেখতে গিয়েছিলাম বিবাহ অভিযানের ৩৪ বছর উপলক্ষে। আমার মুখটা ধরে তাকিয়ে ছিলেন। কত স্মৃতি মনে পড়ছে। খুব ভালোবাসতেন আমায়। ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে প্রথম পরিচয় দিল যে, সেই মানুষটাই আর নেই। বাংলার থেকেও মণিপুরের ছবির জনক বলা হত তাঁকে। এর থেকে যন্ত্রণার আর কিছু নেই।'
হ্যাঁ, মণিপুর ছবির জগতের প্রাণপুরুষ দেব কুমার বসু। মণিপুরি চলচ্চিত্রের পথচলাই শুরু তাঁর হাত ধরে। ‘মাতমগি মণিপুর’ (১৯৭২) অর্থাৎ আজকের মণিপুর ছবি বানিয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন দেব কুমার বসু। মণিপুরি ছবির জনক বলা হয় তাঁকে।
এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচালক প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী পরিচালকের মৃত্যু সংবাদ জানিয়েলেখেন, 'বাবা দেবকী কুমার বসু। বাংলা সিনেমা জগতের কিংবদন্তী প্রবাদ পুরুষ। সিনেমার কাজ তিনি তাঁর বাবার হাত ধরেই শিখেছিলেন। কিন্তু বাংলায় তিনি সিনেমা পরিচালনা করলে তাঁর বাবার ছবির তার ছবির সাথে তুলনা করা হলে ,পাছে তাঁর বাবার অস্বস্তি হয় এই অতি বাস্তব কথাটা ভেবেই তিনি বাংলার পরিবর্তে তাঁর কর্মস্থল বেছে নিলেন মণিপুরে। পরবর্তী সময়ে পরিচালক হিসেবে তিনি যথেষ্ট প্রশংসিত হন এবং নিজগুণে রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার লাভ করেন। মণিপুরের সিনেমার ইতিহাসে শ্রী দেবকুমার বসু'র নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বাঙ্গালী দর্শকদের মনে তিনি চিরস্থায়ী হয়ে রইলেন তাঁর অমর সৃষ্টি বাংলা সিরিয়াল ‘বিবাহ অভিযান’ এর মাধ্যমে। আজ সকালে ৯১ বছর বয়সে তিনি চির বিদায় নিলেন। তাঁর বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করি। কাকু আমি জানি তুমি আজ থেকে কাকিমার সাথে আবার খুব ভালো থাকবে।'
বাবা কিংবা ঠাকুর্দার পদচিহ্ন অনুসরণ করে ছবির জগতের সঙ্গে যুক্ত হননি দেব কুমার বসুর পুত্র, দেবাশিস বসু। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁর স্ত্রী মানসী বসু রাজনীতির জগতেরমানুষ,বর্তমানে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর মানসী। শুক্রবারই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে পরিচালকের।
6.88% Weekly Cashback on 2025 IPL Sports