ভারতীয় নবজাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর । আজ ২৬ সে সেপ্টেম্বর এই মহান মনীষীর ২০০ তম জন্মজয়ন্তীতে তাঁর চিন্তাধারা,আদর্শ, সমাজ চেতনা সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক । কাজেই বাংলার এই বীর সন্তানকে জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে নিজের পরবর্তী তথা নতুন নিবেদনের ডালি নিয়ে হাজির হলেন সংগীত শিল্পী অনুপম রায় । বীরসিংহের সিংহশিশুর চরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের জুটি বেঁধেছেন অনুপম। অনেকটা পত্র সাহিত্যের ঢঙেই নিজের নিজের নতুন গান প্রকাশ করলেন তাঁরা। বিষয় হিসেবে বেছে নিলেন বিদ্যাসাগর এবং তাঁর সমসাময়িক বাংলার অপর এক বিরল প্রতিভা,মাইকেল মধুসূদন দত্তের সম্পর্ককে । নিজ কবিতায় ঈশ্বরচন্দ্রকে মাইকেল ‘বিদ্যার সাগর’, ‘করুণার সিন্ধু’, ‘দীনের বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেছিলেন।মাইকেলের ইংরেজি গদ্যে বিদ্যাসাগর খুঁজে পেয়েছিলেন প্রাচীন পণ্ডিতের প্রতিভা ও জ্ঞান, ইংরেজের কর্মশক্তি ও বাঙালি মায়ের হৃদয় । কিন্তু চরিত্রের দিক থেকে দুজনেই ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন ঘরানার মানুষ । 'একদিকে বিদ্যাসাগর ছিলেন চূড়ান্ত শৃঙ্খলাপরায়ণ, দৃঢ় মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব , অপর দিকে মধু কবি ছিলেন বেপরোয়া , বেহিসেবি । কিন্তু অদ্ভুতভাবে দুজনেই দুজনকে চিনেছিলেন, তাই নিজের বিপদে একাধিকবার করুণাসাগরের কাছে হাত পাততে কুন্ঠিত হননি মধুসূদন । বিদ্যাসাগরও একাধিবার বিব্রত হয়েও কখনোই ফেরাননি মাইকেলকে , অন্যের কাছে অপমানিত হয়েও অর্থ সাহায্য করেছেন। শেষে চিরবিদায়ের আগে নিজের সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে দয়ার সাগরের যাবতীয় ঋণ পরিশোধ করে দিয়ে যান মধুসূদন ',গানের প্রমোশনাল ভিডিওতে একান্ত কথোপকথনে জানালেন দুই শিল্পী অনুপম এবং অনির্বান । অনুপম জানিয়েছেন , লকডাউনের সময় বই পড়তে পড়তে বিদ্যাসাগরের জীবনী হাতে আসে তাঁর । সেটা পড়ার সময়েই এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করার কথা তাঁর মাথায় এসে । ' কথোপকথনের ভিত্তিতে প্রোজেক্টটি তৈরি , কাজেই আমার আরেকটি কণ্ঠের দরকার ছিল । তখনই অনির্বানের কথা মাথায় আসে এবং ও রাজিও হয়ে যায় । আমি প্রথম উমা ছবির প্রচারের সময় অনির্বাণকে আমার 'আলস্য ' গানটি গুন্ গুন্ করতে শুনি । তারপরে ধীরে ধীরে আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে ও গান নিয়ে কতটা সিরিয়াস ।'