একসময়ের ডাকসাইটে খলনায়িকা অনামিকা সাহা, যার চোখের দিকে তাকালেই ভয় লেগে যেত। ওপার বাংলার মেয়ে অনামিকার আসল নাম ঊষা। নতুন নাম থেকে নতুন জীবন, সবকিছুই হয়েছে টলিউডের আসার পর। যদিও কাঁটার রাস্তায় হাঁটতে হয়েছে তাঁকেও। জীবনের সায়াহ্নে এসে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জীবনের অজানা কথা মেলে ধরলেন অনামিকা সাহা।
আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে অনামিকা তুলে ধরলেন, কীভাবে সুমিত্রা মুখোপাধ্যায়ের পরিচিতির কারণে তাঁকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয় সিনেমা থেকে। কীভাবে আলাপ হয়েছিল স্বামীর সঙ্গে। কেন কোনও পরিচালক বা প্রযোজক বন্ধুত্ব করতে চাননি অভিনেত্রীর সঙ্গে।
আরও পড়ুন: 'মৃত্যুর মুখে ঠেলে…', হঠাৎ কী নিয়ে এমন পোস্ট করলেন ঝিলম?
আরও পড়ুন: চুল কেটে রেডি! পুরনো লুকে নতুন ছবির শ্যুটিং শুরু কার্তিকের
ওপার বাংলার রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র দিদির জন্যই অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে যান তিনি। সিনেমার প্রতি দিদির আগ্রহ থাকায় দিদির সঙ্গে একদিন তিনি গিয়েছিলেন শ্যুটিং দেখতে। দিদির নির্দেশ অনুযায়ী স্টুডিওপাড়ায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেও কারও সাথে কথা বলেননি তিনি। এমনকি এক ভদ্রলোক নাম জিজ্ঞাসা করলেও চুপ করেছিলেন ঊষা। কে জানত, এই ঘটনাই চিরতরে নাম পরিবর্তন করে দেবে তাঁর। ঊষাকে চুপ করে থাকতে দেখে স্টুডিওপাড়ার সেই ভদ্রলোক নায়িকার নাম দিয়ে দেন ‘অনামিকা’।
টলিউড বা বলিউড, নেপোটিজম চিরকালই ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম অংশ ছিল। অনামিকার ক্ষেত্রেও তাঁর ব্যতিক্রম হয়নি। কখনও ‘বাঙাল’ বলে দাগিয়ে দিয়ে কখনও আবার ‘কালো মেয়ে’ বলে কটাক্ষ করে সিনেমা থেকে সরিয়ে দেওয়া হতো অভিনেত্রীকে। যদিও সাহায্যও পেয়েছেন অনেকের থেকে, যার মধ্যে অন্যতম হলেন নায়িকার স্বামী বোধিসত্ত্ব মজুমদার।
রত্না ঘোষালের ছেড়ে দেওয়া একটি চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়েই স্বামীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল অনামিকার। স্বামীর হাত ধরেই প্রথম চেনা দক্ষিণ কলকাতার অলিগলি। বনেদি পরিবারের ছেলে হওয়া সত্ত্বেও কালো অনামিকাকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। শাশুড়ির বৌমা পছন্দ না হলেও স্বামী কখনও তিরস্কার করেননি অনামিকাকে।
আরও পড়ুন: অপেক্ষাতেই লুকিয়ে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, এক অন্য প্রেমের গল্পে বলতে আসছে গৃহপ্রবেশ, প্রকাশ্যে এল ঝলক
আরও পড়ুন: রুপোলি পর্দায় আসছে রতন টাটার বায়োপিক, নাম ভূমিকায় দেখা যাবে কাকে?
মেয়ের জন্মের পর অভিনয় থেকে বিরতি নিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু স্বামীর চাকরি ছেড়ে দেওয়ায় আবার থিয়েটার শুরু করতে হয়েছিল অনামিকাকে। যদিও আত্মসম্মানের খাতিরেই কখনও নিজের শ্বশুর বাড়ির পদবী ব্যবহার করেননি নায়িকা। মেয়েকে বড় করাই ছিল তাঁর জীবনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
তবে এত প্রেম থাকা সত্ত্বেও আজ স্বামীর সঙ্গে ঘর করেন না অনামিকা। যদিও শ্বশুর মশাইয়ের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী একই বাড়িতে থাকেন তাঁরা। মেয়ে আজ প্রতিষ্ঠিত। সব ইচ্ছেই পূর্ণ হয়েছে তাঁর। একসময়ের ছবি থেকে বাতিল হয়ে যাওয়ার ভয় পাওয়া সেই অনামিকা আজ নির্ভয়ে ফিরিয়ে দেন একের পর এক কাজের অফার।