২০২৫-এর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (IPL) তৃতীয় সপ্তাহ চলছে। এবারের মরশুমেও গতবারের ছবিই দেখা গেছে। হয় ব্যাট হাতে বড় বড় হিট করো, নাহলেই দলের বাইরে গিয়ে বসো। গতবারের মতোই এবারেও অধিকাংশ ম্যাচেই এটাই হয়েছে, অবশ্যই কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম রয়েছে। যেই দলের বোলিং লাইন আপ খুব ভালো, কিংবা মাঠের উইকেট স্লো, সেই সব স্টেডিয়ামে বাদ দিলে বাকি সব মাঠেই প্রচুর রান উঠেছে।
আইপিএলে সাম্প্রতিক সময় বড় রান ওঠার অন্যতম কারণ হল ব্যাটারদের পাওয়ারপ্লেতে যতটা সম্ভব বড় শট মারার প্রবণতা এবং দলে ইম্প্যাক্ট প্লেয়ারের অন্তর্ভুক্তি। এছাড়াও ফ্ল্যাট পিচও এরকম রান ওঠার অন্যতম কারণ কিছু কিছু স্টেডিয়ামে। এরই মধ্যে আইপিএলে তেমন কোনও নিয়মে বড় পরিবর্তন না এনেই বোলারদের অক্সিজেন দেওয়ার উপায় বের করলেন ভারতের বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার সুনীল গাভাসকর।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক দৈনিক সংবাদমাধ্যম মিড ডে-তে তার কলামে গাভাস্কার বলেছেন যে মাঠের বাউন্ডারি লাইন পিছিয়ে দেওয়া গেলে আইপিএলে অত বড় স্কোরের ম্যাচ হওয়া কমবে। সানি বলছেন, “বর্তমানে দেখা যাচ্ছে পাওয়ারপ্লেতে ব্যাটারদের খেলার স্টাইল বা মানসিকতার ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে, কিন্তু সেই তুলনায় বাউন্ডারির সাইজ কিন্তু পরিবর্তন করা হয়নি।"
শার্দুল ঠাকুরও বলেছিলেন বোলারদের কথা ভাবতে
এবারের আইপিএলের প্রথম ১১টি ম্যাচের ২২টি ইনিংসের মধ্যে ৬টি ইনিংসেই ২০০-এর বেশি উঠেছে। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ দল নিজেদের প্রথম ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে ২৮৬/৬ রান করেছিল। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি ম্যাচে এমন বড় রান উঠেছে, কিন্তু তা রুখতে বোলারদের পাশে কেউ দাঁড়ায়নি। সম্প্রতি এক ম্যাচে চার উইকেট নেওয়ার পরও আইপিএলের উদ্যোক্তাদের কাছে শার্দুল ঠাকুর আবেদন জানিয়েছিলেন, যাতে বোলারদের কথা চিন্তাভাবনা করা হয়।
সিরাজও গতবার আর্জি জানান
গতবার মহম্মদ সিরাজকেও একই কথা বলতে শোনা গেছিল, যাতে বোলারদের কথা ভেবে পিচ বাড়ানো হয়। অনেকে ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার নিয়মেরও বিরোধিতা করেছিল, কিন্তু ব্যাটারদের পক্ষে সব নিয়মই বহাল রেখেছে বিসিসিআই। যা নিয়েই এবার সুনীল গাভাসকর কোনও নিয়মে তেমন পরিবর্তন না করেই খেলায় ভারসাম্য আনার জন্য নয়া আইডিয়া দিলেন।
বাউন্ডারি লাইন বাড়ানোর দাবি
সুনীল গাভাসকর লিখেছেন, “LED বিজ্ঞাপন বোর্ডের পরে আরও জায়গা রয়েছে। অর্থাৎ ফেন্সিংয়ের সঙ্গে ভালোই দূরত্ব রয়েছে বিজ্ঞাপন। আমরা হামেশাই দেখতে পাচ্ছি যে স্রেফ একটুর জন্য বাউন্ডারি রোপ টপকে যাচ্ছে কয়েকটা ছয়। সেক্ষেত্রে যদি মাঠের বাউন্ডারি বা সিমানা যদি একটু বাড়িয়ে দেওয়া যায়, অর্থাৎ LED বোর্ডগুলো যদি একটু পিছিয়ে ফেন্সিংয়ের কাছে আনা হয় তাতে কয়েকমিটার জায়গা পাওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে বোলাররা এর থেকে সুবিধা পেলেও পেতে পারে, এবং ছয় হওয়ার পরিবর্তে ক্যাচ হওয়ার সুযোগও তৈরি হবে। "
ক্রিকেটারদের পুরস্কার মূল্য বাড়ানোর দাবি-
এরপর সামগ্রিকভাবে ক্রিকেটারদের জন্যেও বড় আর্জি জানিয়েছেন গাভাসকর। তিনি বলছেন, ‘২০০৮ সালে ক্রিকেটাররা ম্যাচের সেরা হলে যে পরিমাণ অর্থ পেত,এখনও প্রায় সেরকমই অর্থ পাচ্ছে। সেদিক থেকে দেখলে স্পন্সরশিপ বা ব্রডকাস্টারদের থেকে প্রাপ্ত অর্থ সেই তুলনায় অনেক বাড়লেও ক্রিকেটারদের ম্যাচ শেষে পাওয়া পুরস্কারের অর্থ সেরকমভাবে বাড়েনি। এবার যেহেতু আইপিএল প্রাপ্তবয়স্ক হল মানে ১৮ বছরে পা দিল, তাই এই বিষয়টাও ওদের বিবেচনা করা উচিত। কারণ আমরা ছোটবেলায় স্কুল থেকে কলেজে উঠলে আমাদের মা-বাবারা কিন্তু পকেট মানি বাড়িয়ে দিতেন ’।