বাংলাদেশ ক্রিকেট দ্বিগুণ ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছে। প্রথমে, কলম্বো টেস্ট ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ইনিংস এবং ৭৮ রানে পরাজিত হয়ে দুই টেস্টের সিরিজ হেরেছে। আর ০-১ এই সিরিজ হারের পর বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত টেস্ট ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ হারের পরেই তিনি এই কথা ঘোষণা করে দেন। গলে দুই দলের মধ্যে খেলা প্রথম টেস্ট ম্যাচটি ড্র হয়েছিল। শান্ত গল টেস্টে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করে ইতিহাস লিখেছিলেন, কিন্তু দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে তিনি তাঁর পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি করতে পারেননি। এছাড়াও, বাংলাদেশের ব্যাটিং উভয় ইনিংসেই খারাপ ভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে। এই টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশের কোনও ব্যাটসম্যান অর্ধশতরানও করতে পারেননি।
দ্বিতীয় টেস্টে ব্যর্থ হন শান্ত
গলে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলা প্রথম টেস্টের উভয় ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছিলেন শান্ত। তিনি বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। গল টেস্ট ম্যাচের প্রথম ইনিংসে তিনি ১৪৮ রান এবং দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ১২৫ রান করেছিলন। প্রথম টেস্ট ম্যাচটি ড্র হয়েছিল। তবে কলম্বোতে বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাটিং খারাপ ভাবে ব্যর্থ হয়। প্রথম ইনিংসে তিনি মাত্র ৮ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান, যেখানে দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি মাত্র ১৯ রান করতে পারেন। দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে পরাজয়ের পর শান্তকে খুব হতাশ মনে হচ্ছিল।
ম্যাচ হারের পর শান্ত ঠিক কী বলেছিলেন?
ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন যে, ‘আমি আর টেস্ট ক্রিকেটে আর অধিনায়কত্ব করতে চাই না। দলের উন্নতির জন্য আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার মনে হয়, এটি দলকে সাহায্য করবে। আমি গত কয়েক বছর ধরে ড্রেসিংরুমের অংশ। আমার মনে হয়, তিন ফরম্যাটে তিন জন অধিনায়ক রাখার সিদ্ধান্ত বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আমি জানি না বোর্ড এই বিষয়ে কী ভাববে? আমি তাদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করব। কিন্তু এটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, তিন জন ভিন্ন অধিনায়কের সঙ্গে মোকাবিলা করা দলের জন্য কঠিন হবে। আমি চাই না, কেউ ভাবুক যে, এই সিদ্ধান্তটি আবেগপ্রবণ, অথবা আমি কোনও কিছুতে হতাশ। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, এই সিদ্ধান্তটি দলের উন্নতির জন্য।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘কয়েক দিন আগে আমি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে আমার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলাম।’
শান্তকে ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে
এই মাসের শুরুতে শান্তকে ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং মেহেদী হাসান মিরাজকে দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, শান্ত জানুয়ারিতে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন। তিনি ১৪টি টেস্ট ম্যাচে দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর অধিনায়কত্বে দল চারটি ম্যাচে জিতেছে, যেখানে বাংলাদেশ ৯টি ম্যাচে পরাজিত হয়েছে। একটি ম্যাচ ড্র হয়েছে।
শান্তর অধিনায়কত্বে পাকিস্তানে দুই টেস্টের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল বাংলাদেশ। নজির গড়েছিলেন শান্ত নিজেও। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর পারফরম্যান্সও খুব ভালো। ক্রিকেটার হিসেবে তাঁর গড় ছিল ৩৬.২৪, যখন তিনি অধিনায়ক ছিলেন না, তখন তার গড় ছিল ২৯.৮৩।