ইংল্যান্ডের ৩৫১ রানের বিশাল স্কোর দেখে, ব্যাট করতে নামার আগেই যেন ক্লান্ত হয়ে পড়েন ট্র্যাভিস হেড। মাঠে দাঁড়িয়েই হাই তুলছিলেন। যে ছবি ক্যামেরাবন্দি হতে সময় নেয়নি। আর সেটি ভাইরাল হতেই, শুরু হয়ে গিয়েছে ট্রোলিং।
শনিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রেকর্ড গড়ে রানের পাহাড় গড়েছে ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে ৩৫১ রান করে তারা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে যা সর্বাধিক। ১৬৫ রান করে নজির গড়েন ওপেনার বেন ডাকেটও। আর ইংল্যান্ডের ৩৫১ রানের বোঝার কথা ভেবেই যেন ব্যাট হাতে ক্রিজে নামার আগেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন ট্র্যাভিস হেড। তাঁর হাই তোলার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় একেবারে হাসির রোল উঠেছে।
আরও পড়ুন: ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের জয়ের কোনও সম্ভাবনাই নেই… চাঞ্চল্যকর দাবি পাক প্রাক্তনীর
সেই সঙ্গে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে রান না পাওয়া নিয়েও চলছে ঠাট্টা-তামাশা। একজন জোফ্রা আর্চারের ছবি, ব্রিটিশ বোলারের মুখে কথা বসিয়ে লিখেছেন, ‘নীল জার্সি দেখে ভারতীয় বোলার ভাবলে নাকি!’ আবার একজন ট্র্যাভিস হেডের ছবি তাঁর মুখে কথা বসিয়ে লিখেছেন, ‘ইংল্যান্ড ছিল, তাই ছেড়ে দিলাম। ভারত হলে পিটিয়ে দিতাম।’ আসলে ভারতের ব্লু জার্সি। আর টিম ইন্ডিয়ার মুখোমুখি হলে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলেন হেড। একেবারে জ্বলে ওঠেন তিনি। ২০২৩ ওডিআই বিশ্বকাপের ফাইনাল তাঁর সবচেয়ে বড় প্রমাণ। এদিন ইংল্যান্ডও ব্লু জার্সি পরেছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে মাত্র ৬ রান করে জোফ্রা আর্চারের বলে আউট হন হেড। আর তার পর থেকেই ট্রোলিং শুরু নেটপাড়ায়।
প্রথম সারির পাঁচ ক্রিকেটারকে ছাড়াই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে নামে অস্ট্রেলিয়া। নিজেদের প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, যে দলকে কিছুদিন আগেই ওডিআই সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছে ভারত। শনিবার লাহোরের মাঠে প্রথমে ব্যাট করে ৩৫১ রান করে ইংল্যান্ড। তাদের হয়ে ১৬৫ রানের ইনিংস খেললেন বেন ডাকেট। সেই সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রেকর্ড গড়েন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির একটি ইনিংসে এটি কোনও ব্যাটারের করা সর্বাধিক রান। ২১ বছর আগের রেকর্ড ভেঙেছেন ডাকেট। ২০০৪ সালে আমেরিকার বিরুদ্ধে ১৪৫ রান করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের নেথান অ্যাস্টল। দলগত রেকর্ডও হল ইংল্যান্ডের। ২০০৪ সালে আমেরিকার বিরুদ্ধে ম্যাচেই ৩৪৭ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড। সেই নজিরও এদিন ভেঙে গেল।
টস জিতে এদিন বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তাদের এই সিদ্ধান্তই যেন বুমেরাং হয়ে গেল। তবে ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করতে নামলে, ম্যাচের একেবারে শুরুতেই, দ্বিতীয় ওভারে ধাক্কা খায় তারা। দলের ১৩ রানের মাথায় ব্যাক্তিগত ১০ করে সাজঘরে ফেরেন ফিল সল্ট। এরপর ছয় ওভার চলাকালীন দ্বিতীয় উইকেট পড়ে। জেমি স্মিথ ১৫ করে আউট হন। তখন দলের স্কোর ৪৩। তবে এর পর জো রুটকে সঙ্গী করে লড়াই শুরু করেন ডাকেট। পরের ২৫ ওভার লড়াই চালিয়ে যায় ডাকেট ও রুট জুটি। ১৫৮ রানের পার্টনারশিপ গড়ে এই জুটি। এতেই ভিত পোক্ত হয় ইংল্যান্ডের। তবে ডাকেট শতরান করলেও, রুট ৬৮ রান (৭৮ বলে) আউট হয়ে যান।
আরও পড়ুন: গিলের শতরানের জন্য নিজের হাফসেঞ্চুরি বলি দেন কেএল, যদি হার্দিক হতেন… নেটপাড়ায় পুরনো আতঙ্ক
জো রুট সাজঘরে ফেরার পর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে শুরু করে ইংল্যান্ড। এর পর বড় রান কেউ করতে পারেননি। হ্যারি ব্রুক ৩, অধিনায়ক জস বাটলার ২৩, লিয়াম লিভিংস্টোন ১৪, ব্রিডন কার্স ৮, জোফ্রা আর্চার অপরাজিত ২১ এবং আদিল রশিদ অপরাজিত ১ করেন। তবে ৩টি ছয়, ১৭টি চারের হাত ধরে ডাকেটের ১৪৩ বলে ১৬৫ রানের ইনিংস ইংল্যান্ডকে ৩০০ রানের গণ্ডি পার করতে সাহায্য করে। নয়ে জোফ্রার ২১ রানও বড় প্রাপ্তি। তার জন্য ইংল্যান্ড সাড়ে তিনশোর গণ্ডি টপকায়।
প্রসঙ্গত, ভারতের বিরুদ্ধে শেষ এক দিনের ম্যাচে চোট পেয়েছিলেন ডাকেট। তাঁর খেলা নিয়ে সংশয় ছিল। তিনি শুধু খেললেন না, ইংল্যান্ডের রেকর্ডের পথে নিজের রেকর্ডও করলেন। সেই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ঘুম উড়িয়ে দিলেন ব্রিটিশ ওপেনার।