মহলয়ার দিনকে ঘিরে বিশ্বভারতীর অন্যতম আকর্ষণ আনন্দমেলা। প্রতিবছরের মতো এ বছরও গৌরপ্রাঙ্গণে সেই মেলার প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু উৎসবের আগেই হঠাৎ অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়। জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি সংঘর্ষ বাঁধে দুটি ছাত্রগোষ্ঠীর। যোগা বিভাগ ও কৃষি বিভাগের পড়ুয়ারা একে অপরের সঙ্গে মারপিটে জড়িয়ে পড়ে। প্রথমে তীব্র বচসা, আর সেই বচসা দ্রুত রূপ নেয় সংঘর্ষে। ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর পাঠভবনের হস্টেলে বসে মদ্যপান, সাসপেন্ড দশম ও দ্বাদশের পাঁচ ছাত্র
জানা যাচ্ছে, মেলায় বাঁশ পোঁতার কাজ নিয়ে বিবাদ থেকে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। তা মুহূর্তে হাতাহাতি এবং বাঁশ নিয়ে মারামারিতে গড়ায়। সংঘর্ষে গুরুতর জখম হয় দুই ছাত্র। কৃষি বিভাগের এক পড়ুয়ার মাথা ও নাক ফেটে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে দ্রুত বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর ছাত্রের আঘাতও গুরুতর বলে জানা গেছে। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, গৌরপ্রাঙ্গণে উপস্থিত নিরাপত্তারক্ষীরা তড়িঘড়ি ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। তবুও কিছুক্ষণ ধরে উত্তেজনা ছড়ায় গোটা ক্যাম্পাসে। ঘটনার পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাড়তি নিরাপত্তা মোতায়েন করেছে, যাতে মেলা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।
প্রসঙ্গত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় থেকেই বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যের অংশ এই আনন্দমেলা। মাত্র এক দিনের এই মেলা বিকেল থেকে শুরু হয়ে রাত আটটা পর্যন্ত চলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের পড়ুয়ারা নিজেদের হাতে তৈরি খাবার ও শিল্পসামগ্রী বিক্রি করে। সেই আয় আংশিকভাবে পাঠভবনের তহবিলে জমা পড়ে, যা পরবর্তীতে দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের সাহায্যে ব্যবহার করা হয়। ফলে এই মেলাকে ঘিরে পড়ুয়াদের উৎসাহ বরাবরই তুঙ্গে থাকে। কিন্তু এবারের প্রস্তুতির সময় সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ জানিয়েছেন, যাঁরা এই অশান্তি ঘটিয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আহত পড়ুয়াদের চিকিৎসার খোঁজও রাখা হচ্ছে। স্থানীয়রাও বলছেন, মহালয়ার দিনে যখন হাজারো মানুষ মেলায় ভিড় জমান, তখন এরকম অশান্তি বিশ্বভারতীর ভাবমূর্তিতে আঘাত হানে।