তৃণমূল সরকারের নিয়োগ দুর্নীতিতে চাকরিচ্যুত গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে একের পর এক প্রশ্নে বিদ্ধ করল কলকাতা হাইকোর্ট। বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের দায়ের করা মামলায় এদিন বিচারপতি অমৃতা সিনহার প্রশ্নের মুখে কার্যত দিশাহারা দেখায় অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তকে। এই মামলার শুনানি শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি।সোমবার প্রথমার্ধে এই মামলার শুনানিতে ভাতা দেওয়ার ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। বিরতির পর দ্বিতীয়ার্ধের শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত সওয়ালে বলেন, এই মামলা গ্রহণযোগ্যই নয়। কারণ মামলা যারা করেছেন তাঁরা সবাই ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থী। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে তারা কোনও ভাবে প্রভাবিত হচ্ছেন না। এর পর কিশোর দত্তের দিকে একের পর এক প্রশ্ন ধেয়ে আসে বিচারপতির চেয়ার থেকে। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, জনগণের করের টাকায় যে চাকরিচ্যুতদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে তার বিনিময়ে সরকার কী পাচ্ছে? গ্রুপ সি কর্মীদের জন্য ২৫ হাজার টাকা ও গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য ২০ হাজার টাকা মাসিক ভাতা যে ঘোষণা করা হয়েছে তা নির্ধারণ করা হয়েছে কী ভাবে? এই ভাবে আদালতের নির্দেশে চাকরিচ্যুতদের ভাতা দেওয়ার কোনও উদাহরণ কি গোটা দেশে রয়েছে? কোনও প্রশ্নেরই সুনির্দিষ্ট জবাব দিতে পারেননি রাজ্যের আইনজীবী। এর পর মামলার শুনানি শেষ বলে ঘোষণা করে রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।সোমবার প্রথমার্ধে এই মামলার শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, আদালতের রায়ে যাদের চাকরি গিয়েছে তাদের ভাতা দিয়ে আসলে আদালতের রায়ের অবমাননা করছে রাজ্য। দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার রাজ্য সরকারের নেই। এর পর বিচারপতি সিনহা রাজ্যের আইনজীবীকে বলেন, ‘এখনই টাকা দেবেন না’।