ইমাম–মোয়াজ্জেমদের সঙ্গে বৈঠকে শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ওয়াকফ আইন নিয়ে যে হিংসার পরিবেশ তৈরি হয়েছে বাংলায় তার জন্য সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আক্রমণ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারে তুলোধনা করেন অমিত শাহকে। কংগ্রেসকেও নিশানা করেন। আর মঞ্চে ইমাম–মোয়াজ্জেমদের সঙ্গে শিখ এবং হিন্দু পুরোহিতদের পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে শান্তি ও ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন। তার সঙ্গেই এই ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় ইন্ডিয়া জোটকে একসঙ্গে লড়াই করার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে পশ্চিমী দেশে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী কাদের সঙ্গে কথা বলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। সেটা নিয়ে আজ জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
ভারতের সংবিধান বিবিধের মধ্যে ঐক্যের কথা বলেছে। সেখানে মুসলিম বিরোধী নীতি নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অথচ পশ্চিমী দেশগুলিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কার আতিথেয়তা নেন এবং কাদের সঙ্গে কথা বলেন? এই প্রশ্ন গতকালই তুলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘আপনারা মুসলিম বিরোধী। যদি আমার উপর বিশ্বাস করেন, তাহলে আপনারা শান্ত থাকুন। বিজেপির প্ররোচনায় পা দেবেন না। কিন্তু সৌদি আরবে গেলে কার সঙ্গে দেখা করেন। দুবাই গেলে কার আতিথেয়তা নেন? দেশের মধ্যে একরকম কথা। আর দেশের বাইরে আর একরকম কথা।’
আরও পড়ুন: সম্প্রীতির নজির গড়ে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছিলেন, এবার ফেরাচ্ছেন ইয়াসিন পাঠান
এই ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে ইন্ডিয়া জোটকে এক থাকতে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবিধানকে যে বিজেপি মানছে না সেটা তুলে ধরেন। ওয়াকফ বিল নিয়ে এসে সংসদে শরিকদের ধরে তা পাশ করানো হয়েছে। সংবিধান সংশোধন করে সেটা করা হয়নি। আর বাংলায় যে গোলমাল লাগানো হচ্ছে তার জন্য অমিত শাহ দায়ী বলে তোপ দেগেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘প্ররোচনামূলক বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। এটা প্রি প্ল্যান্ড কমিউনাল রায়ট। যে আইন করা হয়েছে সেটা অ্যান্টি ফেডারাল আইন। আমি ইন্ডিয়া টিমকে আবেদন করব, একসঙ্গে এটার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। একসঙ্গে থেকে এই ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’
এছাড়া ইউনিয়ন সিভিল কোড নিয়ে আসার চেষ্টা করছে বিজেপি। যা আরও ধ্বংসাত্মক বলে মনে করে মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আমি আবেদন করছি ইন্ডিয়া জোটের কাছে আসুন আমরা একজোট হয়ে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করি। এটা কোনও ব্যক্তিগত বিষয় নয়। এটা সবাইকে সমস্যায় ফেলবে। আজ একজনের বিরুদ্ধে হচ্ছে। আগামীকাল আরও কারও বিরুদ্ধে হবে। এখন ওরা চাইছে ইউনিয়ন সিভিল কোড নিয়ে আসতে। একটা বছর পর নতুন ঘটনা ঘটবে। নতুন সরকার গড়বে। তখন আশা করি হামাগুড়ি বাবু থাকবেন না। যেসব জনবিরোধী আইন নিয়ে এসেছে সেসব বদল করা হবে।’