থালা একটা। আর সেখানে খাচ্ছে দু’জন। এই দু’জন আবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। খাবারটা অবশ্য মিড–ডে মিল। যা স্কুল থেকে দেওয়া হয়। এই দুই বন্ধু যখন মিড–ডে মিলের খাবার এক সঙ্গে খাচ্ছিল তখন তার ভিডিয়ো করা হয়। সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হয় বলে অভিযোগ। আর তার জেরেই তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই ঘটনা দেখে এবার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর। যে দুই বন্ধু একসঙ্গে এক থালায় মিড–ডে মিলের খাবার খাচ্ছিল তাদের মধ্যে একজন হিন্দু এবং একজন মুসলমান বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও সেই ভিডিয়ো যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল।
এই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই মালদার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) মলয় মণ্ডল মোথাবাড়ি চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক (এসআই) অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আসলে সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ এবং মোথাবাড়ি এলাকায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে। তারপর থেকেই স্পর্শকাতর বিষয়ে প্রশাসন অত্যন্ত সজাগ দৃষ্টি রাখছে। সেখানে এমন ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। ওই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, মোথাবাড়ির অলিটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সোলেমান শেখ ও সন্দীপ সাহা এক থালায় মিড–ডে মিল খাচ্ছে। আর এই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরও পড়ুন: নাচ–গানের আয়োজন রাজ্য বিধানসভায়, অদিতি–লাভলি–সায়ন্তিকা–বাবুলের রভিন পারফর্ম্যান্স
স্কুল সূত্রে খবর, আট মাস আটেক আগে এই দুই বন্ধু যখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত তখন স্কুলে মিড–ডে মিল খাওয়ার ভিডিয়ো তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়েছিলেন ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক রবিউল ইসলাম। সম্প্রতি মোথাবাড়ি এবং মুর্শিদাবাদে অশান্তির আবহে সেই একই ভিডিয়ো আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেন তিনি বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে রবিউল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রীতির বার্তা দিতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিয়ো পোস্ট করি। অন্য কোনও উদ্দেশ্য আমার ছিল না।’ আর শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, মিড–ডে মিলের জন্য স্কুলের পড়ুয়াদের পৃথক থালা–বাটি থাকে। আর তা যদি কম থাকে তাহলে পড়ুয়াদের বাড়ি থেকে থালা–বাটি আনতে বলা হয়। তাই একসঙ্গে একই থালায় খাওয়ার কথাই নয়।
তাই এই ঘটনা ঘটা এবং ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। এই কারণেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব ধর্ম–সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের একসঙ্গে বসিয়ে মিড–ডে মিল খাওয়ার মধ্যেই সম্প্রীতির ছবি তুলে ধরা যায়। তার জন্য এক থালায় খেতে হয় না বলে মনে করে শিক্ষা দফতর। এই বিষয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শক মলয় মণ্ডল বলেন, ‘কেন এমন ভিডিয়ো করা হয়েছিল, স্কুলে মিড–ডে মিলের পরিকাঠামো কেমন সেসব এখন খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ রেজাবুল হোসেনের বক্তব্য, ‘স্কুলে মিড–ডে মিলের জন্য রান্নাঘর,খাবার ঘর এবং প্রত্যেক শিশু পড়ুয়ার জন্য আলাদা থালা আছে। আসলে খেতে বসে খাবার ভাগাভাগি করে খায় তারা। শিক্ষা দফতরকে জানানো হবে।’