আচমকাই চুল ঝরে অকালে টাক পড়ে যাচ্ছিল ৮ থেকে ৮০ সকলের। মহারাষ্ট্রের বুলধানা জেলায় সেই ঘটনায় রীতিমতো হলুস্থুল পড়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনার ৪ মাস পর এবার বুলধানা জেলায় নতুন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এবার বাসিন্দাদের আঙুল ও পায়ের নখে গুরুতর সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শেগাঁও তহসিলের অন্তত পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কারও হাতের নখ ও বা পায়ের নখ বিকৃতি হয়ে যাচ্ছে বা খসে যাচ্ছে। তা ঘিরে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: অকালে টাক পড়ে যাচ্ছে গ্রামের আট থেকে আশির, রহস্যভেদ হল তদন্তে
দ্রুত চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিয়েছিল ডিসেম্বরে। বন্দগাঁও গ্রামের সরপঞ্চ রামেশ্বর ধরকর জানান, প্রায় ১৫০ জন গ্রামবাসীর চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তাঁদের মধ্যেও অনেকের নখ এখন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দল আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করে। পরীক্ষার জন্য আক্রান্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছে। জানা গিয়েছে, বন্দগাঁওয়ে প্রথমে সাতজনের মধ্যে এই সমস্যা দেখা গিয়েছিল। পরবর্তীতে শেগাঁও তহসিলের আরও চারটি গ্রামে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। ৩০ জনেরও বেশি মানুষের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। বুলধানা স্বাস্থ্য বিভাগের স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ অনিল বাঙ্কার এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পাঁচটি গ্রামের ৩০ জনের নখের সমস্যা দেখা যাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে নখ বিকৃত হয়ে গিয়েছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে নখ সম্পূর্ণভাবে খুলে পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক, মানুষের শরীরে সেলেনিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধির কারণ চুল এবং নখের ক্ষতির সম্ভাব্য কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কয়েকদিনের মধ্যে এবিষয়ে রিপোর্ট পাওয়া যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের একটি দল এর আগে চুল ঝরে পড়ার কারণ খতিয়ে দেখে জানতে পারে সেলেনিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধির কারণে এই সমস্যা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দিলীপ ঘোষের বাড়িতে তাবড় BJP নেতারা, বিয়ে নিয়ে 'বিতর্ক' প্রসঙ্গে সুকান্ত বললেন…
বন্দগাঁওয়ের এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, প্রথমে তাঁর চুল ঝরে পড়েছিল। এখন পায়ের নখও উঠে যাচ্ছে। প্রথমে নখ সাদা হয়ে যায়। পরে কালো হয়ে নখ উঠতে শুরু করে। যদিও এই রোগের মূল কারণ স্পষ্ট নয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশ দূষণ এবং জল দূষণ সম্পর্কে গবেষণা করা উচিত। শেগাঁওয়ের এক চিকিৎসক জানান, শরীরে সেলেনিয়ামের উচ্চ মাত্রা থাকলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও, ক্লান্তি এবং এমনকী স্নায়বিক সমস্যার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তিনি আরও জানান, প্রতিদিন শরীরে সেলেনিয়াম প্রবেশের স্বাভাবিক মাত্রা হল প্রায় ৫৫ মাইক্রোগ্রাম। কিন্তু, এই পরিমাণ ৪০০ মাইক্রোগ্রামের বেশি হলেই সমস্যা দেখা দিতে পারে। উল্লেখ্য, চুল ঝরার সমস্যা সামনে আসার পরেই পদ্মশ্রী পুরষ্কারপ্রাপ্ত বুলধানার একজন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডঃ হিম্মতরাও বাওয়াস্কর বলেছিলেন, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা থেকে আসা গম থেকে এই রোগ ছড়িয়েছিল। তবে নখের সমস্যাও কি একই কারণে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।