এবার থেকে ধোঁয়া পরীক্ষা কেন্দ্রে গাড়ি নিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক করছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছে পরিবহণ দফতর। অনলাইন প্রযুক্তি ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। যাতে পরিবহণ দফতরের পোর্টালের সঙ্গে যোগ করা যায় পিইউসি কেন্দ্রগুলিকে। নবান্নে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
বহু গাড়ি চলাচল করছে যারা কর–জরিমানা ফাঁকি দিয়েছে প্রতীকী ছবি : হিন্দুস্তান টাইমস
শহরের রাজপথে বহু গাড়ি চলাচল করছে যারা কর–জরিমানা ফাঁকি দিয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই কর–জরিমানা বকেয়ার পরিমাণ প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। আর সেই টাকা আদায় করতে এবার চালু হচ্ছে নয়া ব্যবস্থা। করখেলাপি ব্যক্তিগত এবং বাণিজ্যিক গাড়িগুলির পলিউশন আন্ডার কন্ট্রোল সার্টিফিকেট আর ইস্যু করা হবে না। বকেয়া কর–জরিমানা মেটালে তবেই ওই শংসাপত্র হাতে পাবেন গাড়ির মালিকরা। আগামী ১ নভেম্বর থেকে এই নয়া নিয়ম কার্যকর হতে চলেছে। শনিবার রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানান, পরিবেশ দূষণের মাত্রা কমাতেই নভেম্বর মাস থেকে নয়া ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে।
এদিকে পরিবহণ দফতরের কাছে বারবার অভিযোগ এসেছে কর–জরিমানা ফাঁকি দিয়ে রাজ্যের নানা প্রান্তে চলছে বহু গাড়ি। কিন্তু নিয়মের ফাঁক গলে পেয়ে যাচ্ছিল পলিউশন সার্টিফিকেট। আসলে এতদিন নিয়ম ছিল, গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট (সিএফ) করার আগে সমস্ত বকেয়া কর মেটাতে হতো। আর পলিউশন সার্টিফিকেটের জন্য দালাল ধরে বাড়তি কিছু টাকা দিয়ে মিলত সেটি। এভাবেই দিনের পর দিন একটা চক্র কাজ করত। তার ফলে পরিবহণ দফতরের আর্থিক ক্ষতি হতো। আর হাসির সঙ্গে মালিকদের হাসিল হতো সার্টিফিকেট। এবার এই চক্রকে ভাঙতে এবং আয় বাড়াতে নয়া ব্যবস্থা নিচ্ছে পরিবহণ দফতর।
অন্যদিকে দু’চাকা এবং চারচাকা গাড়ির ক্ষেত্রে পলিউশন সার্টিফিকেট পেতে খরচ লাগে যথাক্রমে ১০০ ও ১২০ টাকা। এই সামান্য টাকাও দিতে রাজি নন বহু গাড়ির মালিক। ফলে বকেয়া থেকে যাচ্ছে কর। আর ধরা পড়লে যে জরিমানা করা হচ্ছে তার তোয়াক্কা নাকেই চলছে রাস্তায় গাড়ি। এভাবেই কর বকেয়া রেখে প্রত্যেক বছর সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতেন গাড়ির মালিকরা। এই অনিয়মের জেরে পরিবেশ দূষণ বাড়ছিল। সেটি রিপোর্টেও উঠে আসে। আবার কর ফাঁকি দেওয়ায় কোটি কোটি টাকার লোকসান হচ্ছিল রাজ্য সরকারের। এইসব নিয়ম এবার পাল্টে যাচ্ছে। নতুন নিয়মে যাবতীয় বকেয়া মেটালে তবেই মিলবে পলিউশন সার্টিফিকেট।
আর কী জানা যাচ্ছে? এবার থেকে ধোঁয়া পরীক্ষা কেন্দ্রে গাড়ি নিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক করছে রাজ্য সরকার। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছে পরিবহণ দফতর। এখানে উন্নত অনলাইন প্রযুক্তি ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। যাতে পরিবহণ দফতরের পোর্টালের সঙ্গে যোগ করা যায় পিইউসি কেন্দ্রগুলিকে। বকেয়া কর–জরিমানা আদায়ে নবান্নে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেখানেই এই বিষয়টি উঠে আসে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই বকেয়া কর–জরিমানা আদায় করতে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ এবং পরিবহণ দফতরের মধ্যে ‘সংযোগ’ নামে নয়া পোর্টাল চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গোটা ব্যবস্থা ডিজিটাল হচ্ছে। তার ফলে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাবে।