পরিবারে সদস্য সংখ্যা বেশি হলে খাদ্যের চাহিদাও স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে। আর সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই এবার বড় পরিবারের রেশন গ্রাহকদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তাদের বাড়তি খাদ্যশস্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে রাজ্য খাদ্য দফতর। তবে সকলেই এই সুবিধা পাবেন না। কারা পাবেন? সেবিষয়টি জানানো হয়েছে খাদ্য দফতরের তরফে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে রেশন ব্যবস্থায় বড় পদক্ষেপ, গ্রাহকদের মতামত জানতে করা হবে সমীক্ষা
খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, অন্ত্যোদয় রেশন গ্রাহকদের এই বাড়তি খাদ্যশস্য দেওয়া হবে। দফতরের এক পর্যালোচনায় দেখা গিয়েছে, অনেক অন্ত্যোদয় পরিবারে সদস্য সংখ্যা দশজনের বেশি। অথচ কেন্দ্রীয় নিয়ম অনুযায়ী, এই প্রকল্পে প্রতিটি পরিবার মাসে মোট ৩৫ কেজি চাল-গম পায়। সদস্যসংখ্যা যতই হোক, বরাদ্দ তার থেকে বাড়ে না। ফলে খাদ্য সরবরাহ যথেষ্ট হচ্ছে না বলে মনে করছে দফতর। এই সমস্যা মেটাতে দুটি পথ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এক, এমন পরিবারগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করে দু’টি আলাদা রেশন কার্ড দেওয়া হতে পারে। দুই, ওই পরিবারের কিছু সদস্যকে অন্য রেশন প্রকল্পে স্থানান্তর করা হতে পারে। এই সংক্রান্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে রিফর্ম সেলকে নির্দেশ দিয়েছে খাদ্য দফতর।
এছাড়া, আরেকটি দিকেও নজর দিয়েছে দফতর। অন্ত্যোদয় প্রকল্পে যাঁদের পরিবারের সদস্য মাত্র একজন, এমন তিন লক্ষের বেশি কার্ড বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।একইসঙ্গে, রেশন কার্ডে আধার সংযুক্তির (ই-কেওয়াইসি) ক্ষেত্রে যাতে প্রকৃত গ্রাহকরা বঞ্চিত না হন, সে ব্যাপারেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খাদ্য দফতর জানিয়েছে, শুধুমাত্র ই-কেওয়াইসি না করায় যদি কোনও প্রকৃত রেশন গ্রাহকের কার্ড বাতিল হয়ে যায়, তাহলে সেটা ভুল হবে। যদি কোনও সমস্যা হয়, তাহলে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দ্রুত তদন্ত করে সমাধান করতে হবে। এই নিয়ম মানতে সব আধিকারিকদের কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু। তাঁর বক্তব্য, অনেক প্রবীণ ও অসুস্থ গ্রাহক আছেন, যাঁদের পক্ষে ই-কেওয়াইসি করা কঠিন। তাঁদের যাতে খাদ্যসামগ্রী পাওয়া বন্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করাই উচিত। উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৯৭.৩৭ শতাংশ রেশন গ্রাহকের ইতিমধ্যেই ই-কেওয়াইসি সম্পন্ন হয়েছে। এই নিরিখে দেশের রাজ্যগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতেই রয়েছে বাংলা।