বয়স হলে কি একাকিত্ব গ্রাস করে? বিষন্নতা চেপে বসে মনের গভীরে? কিংবা বেলা শেষে প্রেম কিংবা বিয়ে? সমাজ কি অন্য়ভাবে দেখে? এমন নানা প্রশ্ন ওঠে নানান সময়।
তবে এবার ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি, সাইকিয়াট্রিক সোশ্য়াল ওয়ার্ক বিভাগ এই সিনিয়র সিটিজেনদের মনের স্বাস্থ্য ঠিকঠাক রাখতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। কর্মশালা ও প্রচারমূলক নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে। এপ্রিল মাসে শুরু হয়েছিল। এর মধ্য়েই পাঁচটি এই ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এশিয়াটিক সোসাইটি, কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলেও এই ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। সিনিয়র সিটিজেনরাও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ সোস্যাল ডিফেন্স গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া এক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
২১ ও ২১শে জুন তেমনই কর্মসূচি হল পার্ক স্ট্রিটের ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামের আশুতোষ বার্থ সেন্টেনারি হলে। ইউনাইটেড ফর দ্য এল্ডারলি, প্রোমোটিং ওয়েলবিয়িং, ডিগনিটি অ্য়ান্ড রাইটস ইন এজিং এগেন্সট লোনলিনেস অ্যান্ড আইসোলেশন,(United for the elderly, Promoting Well being dignity rights against loneliness and isolation) এই শীর্ষক রাজ্য স্তরের কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।
একাকিত্ব আর সবার থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া, বয়সকালে এই দুটি মনে হয় সবথেকে যন্ত্রণার। কষ্টদায়ক। আর তা নিয়েও আলোচনা হল কনফারেন্সে।
ডিপার্টমেন্ট অফ সাইকিয়াট্রিক সোশ্য়াল ওয়ার্ক, ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি-সিওই (পশ্চিমবঙ্গ সরকার)( Institute of Psychiatry), ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম মিনিস্ট্রি অফ কালচার, ভারত সরকারের উদ্যোগে ও ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল ডিফেন্স( সিনিয়র সিটিজেন ডিভিশন) মিনিস্ট্রি অফ সোশ্যাল জাস্টিস অ্য়ান্ড এমপাওয়ারমেন্ট, ভারত সরকারের সহযোগিতা এই কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।
এখানে কাউন্সেল জেনারেল অফ ইন্দোনেশিয়া সহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। ডিরেক্টর অফ হেলথ সার্ভিস, ডাঃ স্বপন সোরেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসাবে ছিলেন। তিনি সিনিয়র সিটিজেনদের সব দিক থেকে ভালো থাকার উপর বিশেষভাবে জোর দেন। আইওপির সাইকিয়াট্রিক সোসাল ওয়ার্ক বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর তথা প্রজেক্ট হেড মায়াঙ্ক কুমার, সাইকিয়াট্রিক সোশাল ওয়ার্কার কমলিকা ভট্টাচার্য, এমফিল স্কলার সাইকিয়াট্রিক সোশাল ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্ট অনিন্দিতা হালদার, আইওপির সাইকিয়াট্রিক সোশাল ওয়ার্কার বাঁশরি চক্রবর্তী অনুষ্ঠানের নানা দিক নিয়ে তাঁদের মতামত দেন।
বক্তাদের মতে, এই একাকিত্ব আর সবার থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া সিনিয়র সিটিজেনদের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। সমাজে কখনও এই প্রবীণ মানুষদের একপাশে সরিয়ে দেওয়া হয় সেখানে এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে সেই মানুষদের মধ্যে যাতে খুশি ফিরে আসে তার ব্যবস্থা করা হয়। এমনকী যখন ‘ওল্ডার অ্যাডাল্টস’রা বিয়ের করেন বা নতুন সম্পর্কে জড়ান তখন সেটা শুধু আমাদের মেনে নেওয়া উচিত সেটাই নয়, তাঁদেরকে উৎসাহের সঙ্গে স্বাগত জানানো উচিত। এটা শুধু ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, এটা সামাজিক যে অন্ধকার দিক রয়েছে তার বিরুদ্ধে একটা শক্তিশালী প্রতীক।
আসলে জীবন কোনও সীমারেখায় আবদ্ধ হতে পারে না। কেউ ২১ কিংবা ৮১তে জীবনের নতুন অধ্য়ায় শুরু করতেই পারেন সেটা তাঁদের অধিকার। এটা গভীর অর্থবহ। এই লেট লাইফ ম্যারেজ শুধু ভালোবাসার প্রকাশ নয়, এটা নতুন আশা জাগায়। বয়স দিয়ে কাউকে বিচার করার আমরা কে?সকলের অধিকার আছে , স্বাধীনতা আছে তাঁদের মতো করে জীবন ধারন করার জীবনের যে কোনও পর্যায়ে। জীবনের এই শুরুকে উদযাপন করুন।
এই সেমিনার যেন নতুন আলোর সঞ্চার করল অনেকের জীবনে।