কলকাতার নিউমার্কেট সংলগ্ন লিন্ডসে স্ট্রিট। ফুটপাতের একাংশ জুড়ে সারি সারি দোকান। ধর্মতলার ফুটপাত ধরে হাঁটলেও দেখা যায় দুধারে হকার। কিন্তু একটু কান পাতলেই অবাক হতে হয়। কলকাতার রাস্তায় অধিকাংশ হকারই কথা বলেন হিন্দিতে। এমনকী তাঁরা যখন ক্রেতাদের ডাকাডাকি করেন তখনও হিন্দিতে। বাঙালি ক্রেতারাও কার্যত বাধ্য় হয়েই ভাঙা হিন্দিতে কথা বলতে বাধ্য় হন।
এবার প্রশ্ন বাংলায় এত হিন্দিভাষী হকার এলেন কোথা থেকে?
তবে প্রশ্ন করলেই তাঁদের অনেকেই বলেন, তাঁরা নাকি ৩০-৪০ বছর ধরে এভাবে ফুটপাতে বসে ব্যবসা করছেন। এদিকে সম্প্রতি নবান্ন থেকে বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী এই ফুটপাত দখল নিয়ে রীতিমতো ধমক দেন। এমনকী বাংলার পরিচিতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলেও তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপরই তৎপর হয় কলকাতা পুরসভা।
সমীক্ষার কাজ শুরু করে কলকাতা পুরসভা। আর সেই সমীক্ষায় নেমে কার্যত মুখ্য়মন্ত্রী যে আশঙ্কার কথা বলছিলেন এতদিন, সেটাই কার্যত সত্যে পরিণত হল এবার।
কলকাতা পুরসভার সমীক্ষা অনুসারে জানা গিয়েছে, কলকাতায় এমন প্রচুর হকারের সন্ধান মিলেছে যারা মূলত বিহার ও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। অন্তত ১৫০জন পুরকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল যাতে তারা হকার সমীক্ষায় অংশ নিতে পারে। আর তারা ময়দানে নেমে, বলা ভালো ফুটপাতে নেমে সমীক্ষা চালিয়েছিলেন। তাদের সমীক্ষায় যে ফল উঠে এসেছে তা চমকে দেওয়ার মতো।
কম বেশি ১০টি করে টিম এই সমীক্ষায় নেমেছিল। এরপর তারা হকারদের উপর সমীক্ষা করে। প্রতিটি দলে চার পাঁচজন করে সমীক্ষক ছিলেন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৪০টি করে টিম নামানো হয়েছিল। এরপর চলে সমীক্ষা। এদিকে সেই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে কলকাতা শহরের বহু এলাকায় এমন হকার রয়েছেন যারা ভিনরাজ্য থেকে এসেছেন। এটা যথেষ্ট উদ্বেগের।
এদিকে কলকাতার কোন রাস্তায় কত হকার রয়েছেন তাদের নাম, ঠিকানা সহ অন্যান্য তথ্য় অ্যাপে নথিভুক্ত করার জন্য বলা হয়।
এদিকে সূত্রের খবর, চলতি মাসের শেষে অথবা অগস্টের প্রথমেই সমীক্ষার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি হয়ে যাবে। সেই অনুসারে পুরো রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে মুখ্য়মন্ত্রীর কাছে। দেখা যাচ্ছে বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে হাজার হাজার হকার এসে বসে পড়েছেন কলকাতার রাস্তায়। তবে তাদের নিয়ে আখেরে কী করা হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে কলকাতায় এভাবে হাজার হাজার ভিনরাজ্যের হিন্দিভাষী হকারদের উপস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগের। এমনটাই মনে করছেন অনেকে।