গতকাল পুলিশের লাঠির প্রহারে মাথা ফুলে গিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন আরজি করের নির্যাতিতার মা। নবান্ন অভিযানের সময় নির্যাতিতার বাবার ওপরও নাকি পুলিশি হামলা চলেছিল। এই সবের মাঝে নির্যতিতার মাকে গতকাল একটি বেরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ সেখানে গিয়ে তাঁকে দেখে আসেন গতরাতে। এবং নির্যাতিতার মাকে দেখে এসেই তিনি অভিযোগ করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নাকি তাঁকে জানিয়েছেন যে সরকারের ওপর থেকে 'চাপ' আসছে তাদের ওপর। তবে কী চাপ, সেই বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি সজল ঘোষ। পরে তিনি জানান, রবিবার কল্যাণী এইলসে নিয়ে যাওয়া হতে পারে নির্যাতিতার মাকে।
এদিকে খুন হওয়া চিকিৎসকের মায়ের শারীরি অবস্থা নিয়ে সজল ঘোষ বলেন, 'অনেকটাই স্থিতিশীল। তবে আঘাতটা সবাই দেখেছেন। বয়সটাও সবাই জানেন। একটি সিটি স্ক্যান করানো হয়েছিল, সেই রিপোর্টও স্বাভাবিক এসেছে। তবে হেমাটোমা অর্থাৎ কপালে ফোলা ভাব রয়েছে।' এরপর কলকাতার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বলেন, 'এখানে সরকারি চাপ রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বীকার করছে, রাজ্য সরকারের একটা চাপ রয়েছে। সবার সামনে কী আর করবে, যেখানে করার করেছে। তবে এখানে যে চিকিৎসাটা পাওয়া দরকার ছিল, তা পাচ্ছে না। তাই সকালেই হয়ত ওনাকে নিয়ে এইমসে চলে যাওয়া হবে। আপাতত পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।'
এর আগে গতকাল পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ নিয়ে নির্যাতিতার মা বলেছিলেন, 'কলকাতা পুলিশ মেরেছে। পুরুষ ও মহিলা পুলিশ উভয়েই লাঠিপেটা করেছে। আমার শাঁখা ভেঙে দিয়েছে। পিঠে লেগেছে। আমাকে ফেলেও দেওয়া হয়েছে। ওর বাবাকেও মেরেছে। কেন আমায় মারা হল? কেন আমার মেয়েকে কাজের জায়গায় মারা হল? কেন প্রশাসন তৎপর হল না সেদিন?' যদিও এরপরে পুলিশ নির্যাতিতার মায়ের ওপর লাঠিচার্জের অভিযোগ অস্বীকার করে। এর কিছু পরই নির্যাতিতার মাকে এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, মেয়ের ধর্ষণ ও খুনের বিচার চেয়ে আজ নবান্ন অভিযানে সামিল হন বাবা-মা। পার্কস্ট্রিটের কাছে তাঁদের মিছিল আটকানো হয়। অভিযোগ ওঠে, সেইসময় নির্যাতিতার বাবা-মা'কে মারধর করেছে পুলিশ। তারপরও তাঁরা নবান্নে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। কিন্তু রেসকোর্সের পাশে অবস্থান চলাকালীন নির্যাতিতার মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। চোখেমুখে জল দেওয়ার পরেও অসুস্থ বোধ করতে থাকেন তিনি। সেই পরিস্থিতিতে নির্যাতিতার মা এবং বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। নির্যাতিতার বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকা এক চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, কপালে একটা ফোলা অংশ রয়েছে। বাইরে থেকে দেখে যা মনে হয়েছে, তাতে ভোঁতা কোনও জিনিস জোরে মারলে তবেই এরকমভাবে ফুলে যায়। পিঠে একাধিক কালশিটে দাগ আছে। যা দেখে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে যে কিছু দিয়ে মারা হয়েছে। তাছাড়াও হাতেও চোট আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। নির্যাতিতার মা এবং বাবাকে দেখতে হাসপাতালে আসেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।