মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ফের মুখ খুললেন আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতা চিকিৎসকের মা। গত ২৮ অগস্ট টিএমসিপির মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয়েছিল নির্যাতিতার মায়ের থেকে। আর সেই সময়ই তিনি জানান, মমতার মন্তব্যে তিনি মর্মাহত। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, 'তাঁর নিজের ছেলে বা মেয়ে নেই, তাই সন্তান হারানোর কষ্ট তিনি বুঝবেন না।' (আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে 'প্রতিবাদী মুখ' নারী নির্যাতনে অভিযুক্ত নেতারা, অস্বস্তিতে সিপিএম)
আরও পড়ুন: জয় শাহকে নিয়ে অমিতকে 'অভিনন্দন', ভাইদের অর্জনে মমতাকে পালটা 'শুভেচ্ছা' শুভেন্দুর
আরও পড়ুন: মন্তব্য ঘিরে 'বিতর্কের' ব্যাখ্যা দেন মমতা, 'আমল না দিয়ে' পালটা জবাব ডাক্তারদের
এর আগে টিএমসিপির মঞ্চ থেকে 'ফোঁস করা' নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন মমতা। পাশাপাশি বিজেপি শাসিত রাজ্যের নাম নিয়ে 'হুঁশিয়ারি' দিয়েছিলেন তিনি। এই পরিপ্রেক্ষিতে পরে ব্যাখ্যাও দিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি মমতা দাবি করেছিলেন, তিনি আরজি করের প্রতিবাদকে সমর্থন করছেন। তবে এই ঘটনায় খুন হওয়া চিকিৎসকের মা মমতার বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন গতকাল। তাঁর কথায়, 'তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টিএমসিপির মঞ্চ থেকে) যা বলেছিলেন তা আমার পছন্দ হয়নি। সারা বিশ্ব আমার মেয়ের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছে, প্রতিবাদ করছে। এবং তিনি নাকি বলছেন আমরা বিচার চাই না। আমি চাই তারা (আন্দোলনকারীরা) ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাক। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পরিবার বিচার চায় না! মমতার নিজের কোনও ছেলে বা মেয়ে নেই, তাই সন্তান হারানোর কষ্ট তিনি বুঝতে পারেন না। তার মন্তব্যে আমরা খুবই মর্মাহত।'
এর আগে গত ২৮ অগস্ট রামকৃষ্ণদেবের একটি গল্প তুলে ধরে সমর্থকদের উদ্দেশে মমতা বলেছিলেন, 'আমাকে অনেক গালাগাল দিয়েছে, অসম্মান করেছে। বলেছিলাম বদলা নয়, বদল চাই। কিন্তু আজ বলছি যেটা করার দরকার, সেটা আপনারা ভালো বুঝে করবেন। আমি অশান্তি চাই না। যে আপনাকে রোজ কামড়াচ্ছে, তাকে কামড়াবেন না, কিন্তু ফোঁস তো করতে পারতে পারেন।' পাশাপাশি মমতা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, 'বাংলা জ্বললে দিল্লিও বাদ থাকবে না।' পাশাপাশি ওড়িশা, অসম, উত্তরপ্রদেশ, মণিপুরের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যের নাম নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
আবার চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, 'আমরা কিন্তু ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিইনি। কারণ, ওরা বন্ধুর জন্য আন্দোলন করছে। দিল্লিতে কিন্তু ওরা ডাক্তারদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে দিয়েছিল। যে কারণে সুপ্রিম কোর্টকে বলে দিতে হয়েছে, ডাক্তারেরা কাজে ফিরলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি আমার সমর্থন আছে। কিন্তু আপনাদের একটু মানবিক হওয়ারও আবেদন করব। সুপ্রিম কোর্টও আপনাদের অনুরোধ করেছে। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যগুলোকে ক্ষমতা দিয়েছে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কিন্তু আমি আপনাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেব না। আপনাদের ক্ষোভ আছে। অভিমান আছে। আমি সেটা বুঝি। কিন্তু এ বার আস্তে আস্তে কাজে যোগদান করুন। আমরা চাই না, কারও সারা জীবনটা নষ্ট হোক। আমরা যদি এফআইআর করি বা কোনও আইনি ব্যবস্থা নিই, তা হলে আপনাদের কেরিয়ারটা নষ্ট হয়ে যাবে। ভিসা, পাসপোর্টে অসুবিধা হয়ে যাবে। আমি তা চাই না। আমাদের সরকার মানবিক। আমি চাই আরও ভালো ভালো ডাক্তার তৈরি করতে।'