বেশি নম্বর দেওয়ার অভিযোগে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা যায় না। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে ৩২,০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিল মামলার শুনানিতে এমনই যুক্তি পেশ করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সেইসঙ্গে পর্ষদের তরফে দাবি করা হয়েছে, ২০১৬ সালে নিয়োগের যে নিয়ম ছিল, সেটা পালন করেই ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। নেওয়া হয়নি অ্যাপটিটিউড টেস্ট। কিন্তু স্রেফ হাতেগোনা কয়েকজনের দাবির ভিত্তিতে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপরে।
প্রায় ৪৩,০০০ জনের চাকরি, বাতিল ৩২,০০০ জনের
আর যে মামলার শুনানি পর্ষদের তরফে এমন যুক্তি পেশ করা হয়েছে, তা ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট নিয়ে। সেই বছর ১.২ লাখের মতো প্রার্থী টেটে পাশ করেছিলেন। বছরদুয়েক পর থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল। চাকরি পেয়েছিলেন প্রায় ৪৩,০০০ জন।
আরও পড়ুন: কাল ভেঙেছিল ‘লৌহ কপাট’, আজ ভাঙল ব্যারিকেড! বিকাশ ভবনের সামনে উত্তেজনা অব্যাহত
কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একাধিক গলদের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছিল। তারপর ২০২৩ সালের ১৬ মে প্রশিক্ষণহীন ৩২,০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: অন্য দফতর ছেড়ে স্কুলে চাকরি, প্য়ানেল বাতিলের পর তাঁরাই ফিরতে চাইছেন পুরোনো কাজে, জমা পড়ল ৪০০ আবেদন
সেইসঙ্গে হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন যে তিন মাসের মধ্যে নয়া নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। সেইসঙ্গে যে শিক্ষকদের চাকরি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের স্কুলে যাওয়ারও অনুমতি দিয়েছিলেন হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
চাকরি বাতিলের আবেদনই করা হয়নি, সওয়াল রাজ্যের
যদিও সেই রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল পর্ষদ। মামলা করেছিলেন চাকরিহারা শিক্ষকরাও। সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছিল সেই মামলা। তবে হাইকোর্টেই মামলা ফেরত পাঠায় শীর্ষ আদালত। আর হাইকোর্টের বিচারপতি চক্রবর্তী এবং বিচারপতি মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চের শুনানিতে রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়, চাকরি বাতিলের জন্য প্রাথমিকভাবে মামলা দায়েরই করা হয়নি। বরং মামলাকারীরা সওয়াল করেছিলেন যে প্রশিক্ষণ প্রার্থীদের যেমন চাকরি দেওয়া হয়েছে, তেমনই তাঁরাও সুযোগ পান।
আরও পড়ুন: ‘চাকরির মূল্য আমরা বুঝি, আমরাও তো চাকরি করি!’ বিকাশ ভবনের সামনে লাঠিচার্জ নিয়ে মন্তব্য শামিমের
টাকা দিয়ে চাকরির কোনও প্রমাণ মেলেনি, দাবি পর্ষদের
তারইমধ্যে পর্ষদের তরফে সওয়াল করা হয় যে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হচ্ছে। অভিযোগ করা হচ্ছে যে টাকার বদলে চাকরি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুরোটা নেহাত অনুমানের ভিত্তিতে বলা হচ্ছে। টাকা দিয়ে যে চাকরি হয়েছে, সেরকম কোনও প্রমাণ মেলেনি বলে পর্ষদের তরফে সওয়াল করা হয়। আর পর্ষদ এবং রাজ্যের সওয়ালের পরে হাইকোর্ট জানিয়েছেন, গরমের ছুটির পরে ফের মামলার শুনানি হবে।