যুযুধান প্রতিপক্ষ হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের হকার সমীক্ষার প্রস্তাব মেনে নিল রাজ্য সরকার। আর তাই এখন থেকে প্রত্যেকটি পুরসভা এলাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিধি মেনে নথিভুক্ত প্রত্যেক হকার ও তাঁর পরিবারের আর্থ–সামাজিক তথ্য নেওয়ার কাজ শুরু করল নবান্ন। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই প্রকল্পটি না নিলে নগরোন্নয়নের অন্যান্য ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারি বরাদ্দে কোপ পড়তে পারে। তাই অনুদান অবাধ রাখার তাগিদে সমীক্ষায় সিলমোহর দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাছাড়া গ্রামবাংলায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের জন্য অনেক প্রকল্পও আছে। আর সেইসব প্রকল্পকে সামনে রেখে গ্রাম এবং শহরের বড় অংশের মানুষের দিকে অভিমুখ ঘোরাতে চাইছে কেন্দ্র। তাই এমন উদ্যোগ।
খুব অল্প পুঁজি নিয়ে হকাররা ব্যবসা করেন। তাই নানা জিনিস সস্তায় কেনার সুযোগ পান ক্রেতারা। আর এই হকারের ব্যবসার ফলে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়ে। এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় আবাস এবং পুর–বিষয়ক মন্ত্রক ‘পিএম স্ট্রিট ভেন্ডার্স আত্মনির্ভর নিধি’ প্রকল্প চালু করেছে। যার জেরে একজন নথিভুক্ত হকার ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন। তাই পুরসভা বা পুরনিগম এলাকাগুলিতে হকারদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহের পরামর্শ দেয় কেন্দ্র। এই বিষয়ে রাজ্য নগরোন্নয়ন সংস্থার (সুডা) এক কর্তা বলেন, ‘নির্দিষ্ট জায়গায় শিবির করে কাজ চলছে। তাতে এখন সংখ্যাটা অনেকটা বাড়ছে।’
আরও পড়ুন: কলকাতায় বসেই সক্রিয় প্রতারণা চক্র, প্রতারিত বিদেশিরা, কালো টাকার হদিশে তদন্তে ইডি
নথিভুক্ত হকারদের সাহায্য করছে রাজ্য সরকারও। তবে বাইরে থেকে এসে বসে পড়া হকারদের তুলে দিতে চায় রাজ্য সরকার। ২০২৪ সালে নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া পদক্ষেপ করেছিলেন। তার জেরে বাংলার রাজপথে হকার উচ্ছেদ অভিযানে নেমেছিল কলকাতা পুরসভা। ভুয়ো হকারদের তুলে দেওয়া হয়েছিল। কারণ হকারদের রাস্তা দখলের জেরে সাধারণ পথচারীদের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছিল। এবার কেন্দ্রের বিধি মেনে হকার সমীক্ষা চলছে। কারণ আবাস, গ্রাম সড়ক এবং একশো দিনের কাজে বরাদ্দ আটকে থাকলেও নগরোন্নয়নে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ এখনও খোলা আছে। তাই এই প্রকল্প গ্রহণ না করলে সেই বরাদ্দে কোপ পড়তে পারে। সেই আশঙ্কা থেকেই কাজ শুরু হয়েছে।