রান্নার গ্যাস পেতে হলে এবার থেকে বাধ্যতামূলক বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন। এমনই নিয়ম কার্যকর হয়েছে। কিন্তু, আগাম কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই এই নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। তার জেরে তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়েছে গ্রাহকদের মধ্যে। তাঁরা দাবি করেছেন, বুকিং করেও সিলিন্ডার হাতে পাচ্ছেন না বহু মানুষ।
আরও পড়ুন: পরপর ১০টি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে বাড়িতে আগুন, দগ্ধ ব্যবসায়ী, ব্যাপক আতঙ্ক
বর্ধমান শহরের খোসবাগান এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বহু গ্রাহক। তাঁদের অভিযোগ, হঠাৎ করেই ডিলাররা জানাচ্ছেন যে বায়োমেট্রিক না থাকলে সিলিন্ডার দেওয়া হবে না। অথচ এই নিয়ম চালুর ব্যাপারে আগে থেকে কোনও লিখিত নোটিস বা সচেতনতামূলক প্রচার হয়নি।
এক গৃহবধূ বলেন, তাঁর স্বামী বাইরে থাকেন। উনিই গ্যাস অ্যাকাউন্টের হোল্ডার। এখন বায়োমেট্রিক না করায় ডেলিভারি বন্ধ। তাঁদের বাড়িতে একটাই সিলিন্ডার। এটা শেষ হলে রান্না বন্ধ হয়ে যাবে। অন্য এক গ্রাহক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই নিয়ম যদি এত গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে আগে জানানো হয়নি কেন? শুধু তাই নয়, অ্যাপে বায়োমেট্রিক করতেও সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস সংস্থার এক আধিকারিক জানান, ভর্তুকি সংক্রান্ত অনিয়ম রুখতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁর দাবি, বহু উপভোক্তা গ্যাস ব্যবহার করছেন না, তবু তাঁদের অ্যাকাউন্টে ভর্তুকি ঢুকছে। বায়োমেট্রিক হলে প্রকৃত গ্রাহকদের তালিকা তৈরি করা সহজ হবে। তিনি আরও জানান, মোবাইল অ্যাপ অথবা ডিলারের অফিসে গিয়ে এই ভেরিফিকেশন করা যায়।
যদিও গ্রাহকদের একাংশের অভিযোগ, অ্যাপ-ভিত্তিক প্রক্রিয়ায় বারবার ত্রুটি দেখা দিচ্ছে, আর বহু প্রবীণ গ্রাহক মোবাইলভিত্তিক ব্যবস্থার সঙ্গে সেভাবে অভ্যস্ত নন। বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকায় বহু মানুষের একই অভিজ্ঞতা। বুকিং করেও সিলিন্ডার হাতে মিলছে না। ডিলার অফিসগুলোতে বাড়ছে ভিড়, চাপ বাড়ছে কর্মীদের উপরেও।
গ্রাহকদের একাংশের দাবি, যদি বায়োমেট্রিক বাধ্যতামূলক করা হয়, তাহলে তা কার্যকর করার আগে সব জায়গায় নোটিশ দেওয়া উচিত ছিল। লোকাল অফিসগুলোতে বোর্ড ঝুলিয়ে প্রচার করা দরকার ছিল। এরফলে শহরাঞ্চলে যাঁদের বাড়িতে একটিই সিলিন্ডার রয়েছে, তাঁদের জন্য এই পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। রান্নার বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বহু পরিবার সমস্যায় পড়েছে।