হাতে আর ৩২ দিন। তারপরই রাজ্যে ধুমধাম করে শুরু হয়ে যাবে দুর্গাপুজো। কিন্তু এই আবহে ফুটপাতে থাকা হকাররা নানা সামগ্রী বিক্রির কাজ শুরু করে দিয়েছেন। অথচ হকারের জন্য যেন সাধারণ মানুষের পথ চলতে অসুবিধা না হয় সেটা দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। হকার উচ্ছেদের ঘটনাও কদিন আগে ঘটেছে। আর কলকাতা শহরে হকারদের নিয়ে তারপর শুরু হয় সমীক্ষার কাজ। এই কাজ এখন শেষ হয়েছে। তাহলে তো এবার পদক্ষেপ করার পালা। কিন্তু এখনই হকারদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা।
ইতিমধ্যেই শহরের নানা ফুটপাতে বসা হকারদের নথিভুক্ত করা হয়েছে। তবে রাস্তায় বসে যাঁরা হকারি করছেন তাঁদের এই সমীক্ষার আনা হয়নি। এই নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। এই সমীক্ষা উঠে এসেছে শহরের কোন রাস্তায়, কোন ফুটপাতে, কে বসে বা স্টল নিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছেন। এমনকী প্রত্যেক হকারের নাম, প্যান কার্ড, আধার কার্ড–সহ হকারের লোকেশন জিও ট্যাগিং করে ডিজিটাল সমীক্ষা করা হয়েছে। কোন ধরনের হকার বেশি, কতজন কী ব্যবসা করেন, সেগুলিও রিপোর্টে উল্লেখ করা আছে। ভেন্ডিং জোনের বাইরে ফুটপাতে ক’জন হকার ব্যবসা করছেন, সেই তথ্য নিয়ে ২৫ পাতার রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: গুরুতর অসুস্থ সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, এইমস হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে চিকিৎসাধীন
হকার উচ্ছেদ নিয়ে কলকাতায় ধুন্ধুমার কাণ্ড হয়েছিল। তারপরই সমীক্ষার কাজ শুরু হয়। কলকাতা পুরসভার এক অফিসার জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হকার সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কোনও হকারকে উচ্ছেদ করা এখানে লক্ষ্য নয়। প্রত্যেক হকারকে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। কিন্তু দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে কারও রোজগারে হাত দেওয়া উচিত নয়। তাই আপাতত হকার রিপোর্ট নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে না। দুর্গাপুজোর বাজারে হকারদের ব্যবসা হয়। গরিব মানুষের ক্ষতি হোক এমন কোনও পদক্ষেপ রাজ্য সরকার করবে না। উৎসবের মরশুম মিটলে হকার নিয়ন্ত্রণ এবং পুনর্বাসন নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।
এই হকার সমীক্ষার কাজ করতে প্রায় ৬৫০ জন পুরসভার কর্মীকে নামানো হয়েছিল শহরে। ১৫ দিনের মধ্যে হকার সমীক্ষা শেষ হয়। কলকাতা পুরসভার নন–ভেন্ডিং জোনে ডালা নিয়ে হকার বসে আছেন। তাঁদের বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে। এই হকার সমীক্ষায় নথিভুক্ত হকার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ১৭৮। এই সমীক্ষা রিপোর্ট ইতিমধ্যেই জমা পড়ে গিয়েছে। তারপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আপাতত হকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না। একদিকে দুর্গাপুজোর বিকিকিনি শুরু হয়েছে। অপরদিকে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে বিব্রত রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে ‘নো–স্টেপ’ নীতি নিয়ে চলছে কলকাতা পুরসভা।