কলকাতার রাজপথে ফের রাজনৈতিক অস্থিরতা। প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধানভবনে হামলার প্রতিবাদে শনিবার কলেজ স্ট্রিট চত্বর সরগরম হয়ে উঠল। কংগ্রেসের তরফে বিধানভবন থেকে কলেজ স্ট্রিট মোড় পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল ডাকা হয়েছিল। সেই কর্মসূচিকে ঘিরে ফের মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হয় বিজেপি ও কংগ্রেসের। (আরও পড়ুন: অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকায় খানাকুলের দাপুটে তৃণমূল নেতার, নাম আছে তাঁর স্ত্রীরও)
আরও পড়ুন: বিহারে মোদীকে নিয়ে কুকথা, কলকাতায় কংগ্রেস দফতরে তাণ্ডব বিজেপি কর্মীদের
শুক্রবার দুপুরে বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহের নেতৃত্বে একদল সমর্থক হাতে দলীয় পতাকা নিয়ে বিধানভবনে ঢুকে তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর ছবিতে কালি দেওয়া হয়, পতাকা পোড়ানো হয় এবং গেটের বাইরে আগুন জ্বালানো হয়। অভিযোগ, দফতরের ভেতরে ঢুকেও ভাঙচুর চালায় হামলাকারীরা। সেই সময়ে কংগ্রেসের কর্মী বা নেতারা কেউ উপস্থিত ছিলেন না। ঘটনাচক্রে, হামলার আগে থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে এসে রাকেশ ঘোষণা করেছিলেন, সারা দেশেই এই বিরোধিতার নজির তৈরি হবে। (আরও পড়ুন: অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকায় নাম তৃণমূল কাউন্সিলরের, কী বলছেন তিনি?)
ঘটনার পরই শুক্রবার রাতে মৌলালি মোড়ে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মীরা। শনিবার আরও বড় কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। তবে সংঘর্ষ এড়াতে আগে থেকেই সতর্ক ছিল পুলিশ। যদিও কংগ্রেসের একাংশ কর্মী বিজেপির দফতরের সামনে গিয়ে বিক্ষোভের চেষ্টা করেন বলে খবর। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার নিজে হস্তক্ষেপ করে কর্মীদের শান্ত করেন। ফলে পরিস্থিতি বেশি উত্তপ্ত হয়নি। (আরও পড়ুন: 'SSC-র কাছে অযোগ্যদের তালিকা থাকলে যোগ্য শিক্ষকদের কেন পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে?')
বিজেপির তরফেও খবর ছিল, কংগ্রেস তাদের সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ করতে পারে। তাই যুব মোর্চার কিছু সদস্য আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত সরাসরি মুখোমুখি সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
শুক্রবারের হামলার ঘটনায় রাকেশ ঘনিষ্ঠ অন্তত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাকেশ সিংহের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের হয়েছে। অস্ত্র আইন-সহ একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে এন্টালি থানায়। শনিবার দুপুরে তদন্তকারীরা তাঁর বাড়িতেও যান, তবে তখন তিনি বাড়িতে ছিলেন না।
এই ঘটনায় সরব হয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী। তাঁর অভিযোগ, থানার একশো মিটারের মধ্যে এই হামলা ঘটল, অথচ পুলিশ কিছুই করতে পারল না! এখনও মূল অভিযুক্ত ধরা পড়ল না কেন? আসলে দিদি মোদীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। উল্লেখ্য, ঘটনার সূত্রপাত বিহারে। দ্বারভাঙার একটি সভায় কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর প্রয়াত মা-কে নিয়ে কটূক্তি করা হয় বলে অভিযোগ। পরে ওই যুবককে গ্রেফতারও করে বিহার পুলিশ। সেই ঘটনার প্রতিবাদেই শুক্রবার কলকাতায় বিধানভবনে ঢুকে পড়ে বিজেপি কর্মীরা, যা থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলার রাজনীতি।