প্রায় ২ মাস হতে চলল তবে এখনও আরজি কর কাণ্ডের তদন্তের কিনারা করতে পারেনি সিবিআই। রহস্য এখনও বজায় রয়েছে এই মামলায় তবে এর মাঝেই শিয়ালদা আদালতে গতকাল মামলার স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা করে সিবিআই। পাশাপাশি তাঁরা দাবি করেন, আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হয়েছিল। সন্দীপ এবং অভিজিতের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। এই আবহে ধৃতদের ১৪ দিন জেল হেফাজত রাখার আবেদন করে সিবিআই। (আরও পড়ুন: একাকিত্বে ভুগছে সঞ্জয়, আরজি কর কাণ্ডে ধৃতকে নিয়ে আদালতে বড় দাবি আইনজীবী কবিতার)
আরও পড়ুন: ধর্মতলায় প্রতিবাদ মঞ্চ ঘিরে চরম নাটক বৃষ্টিস্নাত রাতে! তাও দমলেন না ডাক্তাররা
উল্লেখ্য, গতকাল আদালতে সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির করা হয়েছিল। দুই ধৃতের আইনজীবীই মক্কেলের জামিনের আবেদন করেন। তবে সিবিআই এর বিরোধিতা করেন। এই আবহে সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন, সিবিআই ধরেই নিয়েছে যে তাঁর মক্কেলকে জামিন দেওয়া হবে না। প্রমাণ লোপাটের যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটা তো জামিনযোগ্য। তাঁর সওয়াল, 'সিবিআইয়ের যেটা মনে হয়, সেটা আমাদের বলতে হবে। অভিজিতের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি সিবিআই এনেছে সে সবগুলিই জামিনযোগ্য।' তবে মুখবন্ধ খামে জমা দেওয়া স্ট্যাটাস রিপোর্ট নিয়ে সিবিআই আইনজীবী স্পষ্ট বলেন, 'অভিযুক্তপক্ষ যাই বলুক, সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে যে সেই মামলায় বেশি কিছু প্রকাশ্যে আনা যাবে না।'
এদিকে গতকাল অভিজিৎ মণ্ডল নিজে আদালতে বলেন, 'সিবিআই প্রমাণ নষ্টের অভিযোগ করছে। ওরা টালা থানা থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছিল। তার ভিত্তিতে আমাকে গ্রেফতার করেছে। আমি টালা থানার ওসি ছিলাম। কিন্তু সেখানে সিসিটিভি নষ্টের কোনও অভিযোগ তো নেই।' অভিজিৎ মণ্ডলের আইনজীবী অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া টালা থানার ওসিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিজিৎ মণ্ডলের আইনজীবী আজ দাবি করেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলিও জামিনযোগ্য। সেক্ষেত্রে তাঁকে অযথা আটকে রাখা হয়েছে।
এদিকে গত ৯ অগস্ট তরুণী চিকিৎসকের খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নাকি একাধিক ফোন করেছিলেন সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মন্ডল। আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসির কল লিস্ট আদালতে জমা দিয়ে এমনই দাবি করল সিবিআই। এই আবহে একাধিক নামজাদা চিকিৎসকের ভূমিকা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বহু নামকরা চিকিৎসককে ইতিমধ্যেই সিবিআই তলব করেছে কল লিস্টের সূত্র ঘরে। তদন্তের মোড় ঘোরানোর ক্ষেত্রে আরও সাক্ষীদের খোঁজ চালাচ্ছে সিবিআই। এদিকে যেসব প্রমাণ লোপাট হয়েছে সেগুলি উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এই আবহে ধৃত সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের জেল হেফাজতের আবেদন করে সিবিআই।