তৃণমূল কংগ্রেসের দৈনিক মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় বুধবার উত্তর সম্পাদকীয় লিখেছিলেন প্রয়াত সিপিআইএম নেতা অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাস। সেটা ছিল প্রথম কিস্তি। তাঁর নিবন্ধের বিষয় ছিল ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে দ্বিতীয় কিস্তি। আগামী দিনে বাকি কিস্তি প্রকাশিত হবে বলে জানা গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্রে। এই নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। সিপিআইএম মুখে কুলুপ এঁটেছে অস্বস্তি এড়াতে। অনিল কন্যাও জানিয়েছেন, তিনি জানতেন না এটা এখানে ছাপা হবে। সবমিলিয়ে বেশ শোরগোল পড়ে গিয়েছে।আজ দ্বিতীয় কিস্তিতে উঠে এসেছে স্বাধীনতা পূর্বের সময়কালে বাঙালি মহিলাদের অবদান প্রকাশিত হয়েছে। আজকের কিস্তিতে রয়েছে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এবং কল্পনা দত্তের ছবি। ‘স্ট্রিপে’ লেখা রয়েছে, ‘যুগান্তর দলের সদস্যরা লাঠিখেলা থেকে সাঁতার কিংবা শরীরচর্চা, সবকিছুই শিখতেন।’ এই লেখাটিও প্রকাশিত হয়েছে জাগো বাংলায়। এখানে স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালি মহিলারা কীভাবে বিপ্লবীদের সাহায্য করতেন তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যা নিয়ে খুব একটা বিতর্ক নেই। কিন্তু তাঁর লেখা সিপিআইএমের মুখপত্র গণশক্তি–তে ছাপা না হযে বারবার জাগো বাংলায় ছাপা হচ্ছে কেন? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।এই উত্তর সম্পাদকীয়তে উঠে এসেছে কল্যাণী দাস–সুরমা দাস তাঁদের সহপাঠীদের সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় গড়েছিলেন ছাত্রী সংঘ। বিপ্লবী দীনেশ মজুমদারের থেকে লাঠি, অস্ত্র চালানোর শিক্ষা নেওয়া সুহাসিনী গঙ্গোপাধ্যায়, কল্পনা দত্ত, ইলা সেন, সুলতা করের মতো অনেকেই যোগ দিয়েছিলেন ওই সংঘে। এখন প্রশ্ন উঠছে, এই লেখা কী সিপিআইএমের মুখপত্রে ছাপা হতো না? তাহলে কেন তা ছাপা হচ্ছে জাগো বাংলায়? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিপিআইএম নেতা বলেন, ‘দলের এখন অবস্থা খারাপ। তাই তাঁদের মুখপত্র শুধু দলের সদস্যদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র প্রথম দিন থেকেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই নিজেকে লাইমলাইটে নিয়ে আসতেই এই পথে হাঁটা।’বাঙালি মহিলাদের অবদানের বিষয় নিয়ে এই নিবন্ধ বঙ্গসমাজে আলোড়ন ফেলার অন্যতম কারণ ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্রে অজন্তার পরিচয় দেওয়া হয়েছে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসাবে। সুতরাং ইতিহাত তাঁর ভালই জানা। কিন্তু তিনি সিপিআইএমের প্রয়াত রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের মেয়ে—এটা গোপন করার কারণ কী? তাই এই নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।রাজ্য–রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর অনিল বিশ্বাসের অহি–নকুল সম্পর্ক কারও অজানা নয়। তাই তৃণমূল কংগ্রেসে অজন্তার একের পর এক লেখা প্রকাশিত হওয়ায় নানা গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। দু’টি কিস্তিতে এখনও পর্যন্ত মমতার প্রসঙ্গে আসেনি। কিন্তু পরবর্তী কিস্তি প্রকাশিত হবে। সেখানে অজন্তা মমতার বিষয়ে কী লেখেন? সেদিকে তাকিয়ে সবাই।