সংযুক্ত মোর্চা নিয়ে আগেই আপত্তি ছিল অধীরের। একুশের নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের পকেট খালি। তারা একটিও আসন পায়নি। দলের অন্দরে আইএসএফ–কে নিয়ে গোল বেঁধেছে। এই অবস্থায় ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা বাড়ালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বিধানসভা নির্বাচনে জোট করে লড়াই করেছি। পুরসভা নির্বাচনে জোট করে লড়াই করব কিনা তা এখনও আলোচনা হয়নি। জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলার ক্ষমতা আমার নেই।’ সূত্রের খবর, মোদীকে আটকাতে পারে দিদি। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের মনে তৈরি হওয়া এই ধারণা থেকেই মোর্চার ভোট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেয়েছেন বলে ঘনিষ্ঠমহলে বলেছেন অধীর চৌধুরী। আর তাতেই জোট বিশ বাঁও জলে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা। যদিও বজায় রাখতে আগ্রহী সিপিআইএম।২০১৬ সালে জোট হয়েছিল বাম–কংগ্রেসের। কিন্তু নির্বাচনের পর তা ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে শেষপর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জোট করেছিল বাম–কংগ্রেস। সেই জোটে যোগ দেয় ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। নাম দেওয়া হয়েছিল ‘সংযুক্ত মোর্চা’। ব্রিগেড সমাবেশে অধীরের অসন্তোষ বিড়ম্বনায় ফেলেছিল বাম নেতৃত্বকে। এবার হাইকম্যান্ড নিযুক্ত পর্যালোচনা কমিটির রিপোর্ট জমা পরার পর শনিবার বৈঠকে বসে প্রদেশ কংগ্রেস। অধিকাংশ প্রবীণ নেতৃত্ব বৈঠকে অনুপস্থিত থাকায় কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তার মধ্যেও বামেদের সঙ্গে জোট রাখার প্রশ্নে কার্যত বৈঠক পরিণত হয় মেছো হাটে। দলের একাংশের দাবি, আলিমুদ্দিনের সঙ্গে জোট করে বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে। জেলার নেতাদের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে প্রদেশ নেতৃত্বকে। তবে সাংবাদিক বৈঠকে আইএসএফ নিয়ে নিজের আপত্তির কথা গোপন করেননি অধীর চৌধুরী। তিনি স্পষ্ট করেন, জোটে আইএসএফ থাকায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে সংযুক্ত মোর্চার ভাবমূর্তি। এটা থেকে আরও স্পষ্ট হয়, সিপিআইএমকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তিনি বলেন, ‘কংগ্রেসের সব নেতা–কর্মীদের মতামত নিয়ে জোট করেছি। হয়তো সেই জোট নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল। কারণ মাঝখানে আইএসএফ ঢুকে জোটের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি মুখে ফেলে দেয়। তাই নতুন করে জোট করতে গেলে সেই সব প্রশ্নের সমাধান দরকার।’আবার ২০১৬ সালের নির্বাচনে অনেক জায়গাতেই কংগ্রেস সমর্থকরা যেহেতু বামেদের ভোট দেয়নি, তাই এবার প্রতিশোধ নিতেই তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছে বলে বামেরা বলে রিপোর্টে উঠেও এসেছে। জোট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে সিপিআইএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকেও। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য, দায় চাপানোর বদলে আত্মবিশ্লেষণ করুন সূর্যকান্ত মিশ্র–বিমান বসুরা। জোট নিয়ে সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের বক্তব্য, ‘আমরা জোট ছাড়ছি না। কেউ যদি অন্য সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে নিতেই পারেন।’ তবে বিতর্ক ধামাচাপা দিতে দলের অন্দরে অধীর চৌধুরী জানান, বামেদের সঙ্গে জোট করার ফলেই ভরাডুবি হয়েছে, এমন কোনও বাস্তব তথ্যপ্রমাণ নেই।