বাংলাদেশে মহম্মদ ইউনুসের নেতত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে গণতন্ত্রবিরোধী, একনায়কতান্ত্রিক বলে তোপ দাগলেন 'বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল' (বিএনপি)-এর অন্যতম শীর্ষ ও প্রবীণ নেতা রুহুল কবির রিজভী। আজ (রবিবার - ৪ মে, ২০২৫) আয়োজিত একটি দলীয় কর্মসূচি থেকে নানা ইস্যুতে ইউনুস প্রশাসনের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন তিনি। জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা - নানা বিষয় তুলে ধরে অন্তর্বর্তী সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন বিএনপি-র এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
এদিন রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত প্রেস ক্লাবে বিএনপি একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়র শাহরিন তুহিনের মুক্তির দাবিতে সেখানে একটি বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।
সেই অনুষ্ঠান থেকেই রিজভী বলেন, 'তুহিনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকার পরিকল্পিতভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের জেলখানায় আটক রেখে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন করতে চায়!' তিনি অবিলম্বে তুহিনের মুক্তির দাবিতে সরব হন এবং ওই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে রুজু করা সমস্ত মামলা খারিজের দাবি তোলেন।
রিজভীর আরও অভিযোগ, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের অধিকার হরণ করছে এবং একনায়কতান্ত্রিক আচরণ করছে!
এখানেই থামেননি বাংলাদেশের এই প্রবীণ রাজনীতিক। তাঁর দাবি, আসলে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারেই নাকি এমন কেউ কেউ আছেন, যাঁরা বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হোক, সেটা চান না। তাঁরা আমজনতার সঙ্গ ভোট ইস্যুতে টালবাহানা করছেন বলেও দাবি করেন রিজভী।
এর পাশাপাশি, মহম্মদ ইউনুসের প্রশাসনর আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ব্যর্থ বলে তোপ দাগেন রিজভী। সম্প্রতি রাখাইনে 'মানবিক করিডর' গড়ে তোলার বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশজুড়ে চর্চা চলছে। কিন্তু, এক্ষেত্রেও অন্তর্বর্তী প্রশাসনের অবস্থানের সমালোচনা করেছেন বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সঙ্কট সমাধানে ব্যর্থ সরকার এখন আন্তর্জাতিক ইস্যুতেও ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।'
এই প্রসঙ্গে দু'টি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল - সম্প্রতি বাংলাদেশ ও মায়ানমারের মধ্যে আলোচনায় স্থির করা হয়, মায়ানমার সরকার বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে কিছু অংশকে দেশে ফেরাবে। কিন্তু, আরাকান আর্মির উপস্থিতিতে সেটা কীভাবে সম্ভব, তা কারও বোধগম্য হচ্ছে না।
দ্বিতীয়ত, রাখাইন প্রদেশে মানবিক করিডর তৈরি করে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য, ওষুধ প্রভৃতি সরবরাহ করা নিয়ে ভাবনা চিন্তা চলছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু, বাংলাদেশের এই অবস্থানও কতটা বাস্তবসম্মত, সেই প্রশ্ন উঠছে।
এদিকে, এসবের মধ্যেই বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও রোডম্যাপ সামনে আনেনি ইউনুস প্রশাসন - যেমনটা বিএনপির দাবি ছিল।