রাজ্য সরকারের খাদ্যসাথী প্রকল্পে প্রতি মাসে বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন রাজ্যের কোটি-কোটি বাসিন্দা। কিন্তু সেই চালের গুণমান কেমন? ঠিকঠাক সময়ে, নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্যশস্য মিলছে তো? রেশন দোকানের পরিষেবা নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট সাধারণ মানুষ? এবার এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে সরাসরি ময়দানে নামছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের প্রতিটি রেশন দোকানে শুরু হচ্ছে ‘সোশ্যাল অডিট’। এই প্রক্রিয়ায় গ্রাহকদের মুখোমুখি হয়ে জানতে চাওয়া হবে চাল-গমের মান, সরবরাহ ঠিকঠাক হচ্ছে কিনা, দোকান খোলা থাকে নির্ধারিত সময়মতো কিনা, এসএমএস পরিষেবা সক্রিয় আছে কিনা, এমনকী দোকানকর্মীদের ব্যবহার ও দোকানের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কেমন সব কিছুই।
আরও পড়ুন: রেশন দোকানের মালিকের কাছ থেকে আইফোন, AC ঘুষ! ৩ অফিসারকে খুঁজছে ACB
জানা গিয়েছে, এই সমীক্ষার দায়িত্ব পেয়েছে রাজ্যের ‘সোশ্যাল অডিট ইউনিট’। প্রথম দফায় রাজ্যের মোট ৫,৫৯৩টি রেশন দোকানে এই অডিট চালানো হবে। এর মধ্যে গ্রামীণ এলাকার ৪,৫৭৬টি এবং পুরসভা এলাকার ১,০১৭টি দোকান রয়েছে। গ্রামে ‘ভিলেজ রিসোর্স পার্সনস’ এবং শহরে তাঁদের সমতুল্য কর্মীরা নির্দিষ্ট প্রশ্নপত্র নিয়ে দোকানে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন।
তবে শুধু গ্রাহকের মতই নয়, রেশন দোকানের মালিক ও কর্মীদের প্রতিক্রিয়াও নেওয়া হবে এই অডিটে। তাঁরা কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, কী সুবিধা পাচ্ছেন তাও জানবে সরকার। সব তথ্য লিখিত আকারে পাঠানো হবে সোশ্যাল অডিট ইউনিটে। সেখান থেকে বিশ্লেষণ করে প্রকাশিত হবে রিপোর্ট। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ জানিয়েছেন, রেশন ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর এবং স্বচ্ছ করতে এই উদ্যোগ। ধাপে-ধাপে রাজ্যের প্রতিটি রেশন দোকানে এই সমীক্ষা হবে।
বর্তমানে রেশন পরিষেবায় ডিজিটাল ই-পস রিসিপ্ট, গ্রাহকের বায়োমেট্রিক যাচাই, এসএমএস পরিষেবা, চাল সরবরাহের গাড়ির অনলাইন ট্র্যাকিংয়ের মতো একাধিক প্রযুক্তিনির্ভর পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য। সমীক্ষার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সোশ্যাল অডিট ইউনিটের ডিরেক্টর বিদ্যুৎ ভট্টাচার্য জানান, এই প্রক্রিয়া কোনও সংস্থার সামাজিক দায়বদ্ধতা ও কর্মদক্ষতা নিরীক্ষার অন্যতম মাধ্যম। এতে প্রকৃত প্রভাব মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়।
উল্লেখ্য, রাজ্যে বর্তমানে ২১ হাজারেরও বেশি রেশন দোকান রয়েছে। তাই চারটি ধাপে গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। প্রথম ধাপের রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে প্রশাসনিক মহলের মত।