তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে ত্রাণ বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগের জেরে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে নানান স্তরের কমপক্ষে ১০ জন নেতার নামে শো কজ নোটিশ জারি করেছে দলীয় নেতৃত্ব। অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল ও দুর্গাপুর এবং জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ির পুর প্রতিনিধিরা। গত সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার ২০ জন গ্রামবাসীকে ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে পড়া বাড়ি মেরামত বাবদ প্রাপ্ত পরিবারপিছু ২০,০০০ টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। গত সপ্তাহে দেগঙ্গায় ত্রাণ বণ্টন কেন্দ্র করে স্বজনপোষণের অভিযোগে উত্তেজনা ছড়ায়। বিডিও অফিসে ভাঙচুর ও লুঠতরাজের অভিযোগে এ পর্যন্ত ঘটনায় ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।জানা গিয়েছে আসানসোল ও দুর্গাপুরের তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ত্রাণ বণ্টনে অবৈধ পদক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে এবং ধূপগুড়িতে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দল-বিরোধী কাজের অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি কৃষ্ণ কুমার কল্যাণী জানিয়েছেন, ‘কারও নাম করব না তবে পুরবোর্ডের ৬ জন নির্বাচিত প্রতিনিধির বিরুদ্ধে শো কজ নোটিশ জারি হয়েছে।’ধূপগুড়ি পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান রাজেশ সিং বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত করে সত্যিটা জানানো হোক।’ আবার আর এক অভিযুক্ত পুরপ্রতিনিধি গৌতম বসাকের দাবি, তাঁকে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়েছে।বাঁকুড়া জেলায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শো কজ নোটিশ জারি করা হয়েছে। সোমবার তিনি তৃণমূলের প্রধান দফতরে নিজের জবাব জমা দিয়ে গিয়েছেন। তবে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন। তৃণমূলের এই শৃঙ্খলাভিত্তিক পদক্ষেপকে অবশ্য ‘লোক দেখানো’ বলছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও তাঁর দলের নেতারা। রাজ্য বিজেপির উপসভাপতি জয় প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘এই সমস্ত অভিযুক্ত নেতার বিরুদ্ধে তো পুলিশের এফআইআর দায়ের করা উচিত। দল কেন তাঁদের ডেকে জবাবদিহি করবে?’তৃণমূলকে চাপে রাখতে সোমবারই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন জয় প্রকাশ ও বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। সন্দেশখালি এলাকায় ত্রাণ বণ্টন নিয়ে বিজেপি কর্মীদের বঞ্চিত করা ও মারধরের নালিশও রাজ্যপালের কাছে করে এসেছেন দুই নেতা।