রাজ্যে প্রথম স্থানাধিকারী হওয়ার পরও কি স্বপ্নপূরণ হবে? আপাতত একটি চিন্তাই ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে শাহিদা পরভিনের মনে। শহিদা মালদার বাসিন্দা। এবারের হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় যুগ্মভাবে প্রথম স্থান অধিকার করেছে সে। মোট ৮০০ নম্বরের পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত নম্বর হল - ৭৮০। বটতলা আদর্শ মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিলেও শাহিদা পরভিন ছোট থেকেই এলাকার একটি আবাসিক গার্লস মিশনে থেকে পড়াশোনা করেছে।
শাহিদাদের বাড়ি মালদার রতুয়া-১ ব্লকের ভাদো গাম পঞ্চায়েতের ছোটো বটতলা গ্রামে। তার বাবা সামসুদ্দোহা প্রতিদিন টোটো চালিয়ে খুবই সামান্য টাকা উপার্জন করেন। তা দিয়ে সংসার টানতেই হিমশিম খেতে হয় তাঁকে। তাঁর স্ত্রী সায়েমা বিবি গৃহবধূ। টালির চাল দেওয়া তাঁদের বাড়ির সর্বত্রই দারিদ্র্যের ছাপ স্পষ্ট। অথচ, সেই ঘরে বসেই যেন 'অসাধ্য সাধন' করে ফেলেছে শাহিদা। তার পরিশ্রম আর জেদের সামনে মাথা নুইয়েছে দারিদ্র্য। সারা রাজ্য়ে সে এখন সেরার সেরা! কিন্তু এরপর কী হবে? জানে না শাহিদা। উত্তর নেই তার বাবা-মায়ের কাছেও।
আজই (শনিবার - ৩ মে, ২০২৫) প্রকাশিত হয়েছে হাই মাদ্রাসা পরীক্ষার ফল। সেই ফলাফল অনুসারে - শাহিদা পরভিন প্রথম হয়েছে। তার দু'চোখে স্বপ্ন - সে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করবে। ডাক্তার হবে। মানুষের রোগ নিরাময় করবে। কিন্তু, সেই স্বপ্ন পূরণ করতে তো অনেক টাকা দরকার! তা আসবে কোথা থেকে? শাহিদার বাবা-মা আশায় বুক বাঁধছেন। মেয়ে তাঁদের 'সোনার টুকরো'! এত ভালো ফল করেছে পরীক্ষায়। তা দেখে হয়তো সরকার বা কোনও সহৃদয় ব্যক্তি হয়তো এগিয়ে আসবেন পড়াশোনার খরচ সামাল দিতে! কিন্তু, এমনটা যে হবেই, তার নিশ্চয়তা কী? তাই আপাতত আশা আশঙ্কায় দুলছে শাহিদা ও তার পরিবার।
শাহিদার সঙ্গে যে যুগ্মভাবে প্রথম হয়েছে, তার নাম ফাহমিদা ইয়াসমিন। সেও মালদা জেলারই মেয়ে। বস্তুত, এবারের হাই মাদ্রাসা পরীক্ষার ফল বলছে, মেধাতালিকায় জায়গায় করে নেওয়া প্রথম ১৫ জন কৃতীর পরীক্ষার্থীর মধ্য়ে ১২ জনই মালদা জেলার বাসিন্দা। আর তাদের মধ্যে ১১ জনই ছাত্রী।
যুগ্ম প্রথম ফাহমিদা মালদা জেলার সামসির হাসপাতাল মোড় এলাকার বাসিন্দা। সে ভগবানপুর হাই মাদ্রাসার ছাত্রী। সেও বড় হয়ে ডাক্তার হতে চায়। ফাহমিদা জানিয়েছে, তার এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে তার গোটা পরিবার।