টেন্ডার দুর্নীতি মামলায় শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ শ্যামল আদককে শনিবার মাঝরাতে গ্রেফতার করল হলদিয়ার সুতাহাটা থানার পুলিশ। আজ, রবিবার তাঁকে হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হবে। কয়েকদিন আগে এই শ্যামল আদক নিখোঁজ থাকায় হুলিয়া জারি করেছিল পুলিশ। পরবর্তীকালে আদালতের রক্ষাকবচ থাকায় তাঁকে গ্রেফতার করতে পারেনি হলদিয়ার পুলিশ। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা তারিখ শেষ হয়ে যাওয়ায় তাঁকে কলকাতায় গ্রেফতার করা হয়। কলকাতা হাইকোর্টের রক্ষাকবচ থাকার সময় ভবানীপুর থানায় হাজিরা দেন। তখন তাঁকে জেরা করা হয়। রক্ষাকবচ থাকায় তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছিল? হলদিয়া পুরসভায় চেয়ারম্যান ছিলেন শ্যামল আদক। তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের অভিযোগ উঠেছিল। ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর হলদিয়ার আজাদ হিন্দনগরের এক নির্মাণ সংস্থার মালিক অরুণাংশু মুখোপাধ্যায় প্রতারণার অভিযোগ তুলে হলদিয়ার ভবানীপুর থানায় এফআইআর করেন। তাঁর সংস্থার সই জাল করে শ্যামল আদক নিজের কোম্পানির নামে ৮৬ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা মূল্যের ক্রেডেনসিয়াল তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে টেন্ডার দুর্নীতির তথ্য উঠে আসে। কয়েক কোটি টাকার অনিয়মের নথি হাতে পায় পুলিশ। হলদিয়া পুরসভার টেন্ডার সংক্রান্ত দেড় হাজার ফাইল পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে। ২ অক্টোবর হলদিয়া আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তখনই গা–ঢাকা দেন শ্যামল আদক। তারপর কলকাতা হাইকোর্টে গিয়ে রক্ষাকবচ নেন। সেটার মেয়াদ শেষ হতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হল।
আর কী জানা গিয়েছে? প্রাক্তন পুরপ্রধানের সময়কালীন পুরসভার টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান সত্যব্রত দাস, কাউন্সিলর নারায়ণচন্দ্র প্রামাণিক এবং অর্থ দফতরের দায়িত্বে থাকা বিকাশ জানাকে থানায় তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করা হয়। তারপর শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে হলদিয়া আদালত। যা হলদিয়া পুরসভার ইতিহাসে নজিরবিহীন। হুলিয়ার নোটিশ প্রাক্তন পুরপ্রধানের হলদিয়ার আজাদ হিন্দনগর এবং কলকাতার রিজেন্ট পার্কের বাড়িতে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এমনকী হলদিয়া আদালত চত্বর, পুরসভা, হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ চত্বর, হলদিয়া–নন্দীগ্রাম ফেরিঘাট, কুকড়াহাটি ফেরিঘাট, হলদিয়ার সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডেও হুলিয়ার নোটিশ সাঁটানো হয়েছিল।