সধবা মহিলাকে বিধবা সাজিয়ে বিধবা ভাতা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। আর তার জেরে জেল খাটার উপক্রম হয়েছে প্রত্যন্ত এলাকার আরেক তৃণমূল কর্মীর স্ত্রীর। থানা পুলিশে ছোটাছুটি তো রয়েছেই। সঙ্গে জেল খাটার আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে গোটা পরিবারের। ওদিকে বিজেপির দাবি, নিজেদের লোককে পাইয়ে দিতে তৃণমূল এতটাই মরিয়া যে জ্যান্ত লোককে মেরে ফেলতে ২ বার ভাবছে না তারা।
ঘটনা নদিয়ার শান্তিপুর পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের আড়পাড়ার। বছর কয়েক আগে স্থানীয় তৃণমূল নেতা উত্তম দেবনাথ শেফালি দে নামে এক বধূকে দিয়ে কাগজ পত্র সই সাবুদ করিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর মাসে মাসে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আসতে থাকে ১০০০ টাকা করে। শেফালিদেবী আবার এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত পরেশ দের স্ত্রী। কিন্তু কোন প্রকল্পের তা জানার চেষ্টা করেননি বলে জানিয়েছেন ওই বধূ। সম্প্রতি বিডিও অফিস থেকে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে তাঁকে জানানো হয়, বিধবা ভাতা পাচ্ছেন তিনি। ওদিকে শেফালিদেবীর স্বামী পরেশবাবু দিব্যি বেঁচে বর্তে রয়েছেন। ওড়িশায় শ্রমিকের কাজ করেন তিনি। স্বামী বেঁচে থাকতেও কেন তিনি বিধবা ভাতার আবেদন করেছিলেন তা জানতে চান বিডিও। টাকা ফেরত না দিলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান। একথা শুনে আকাশ ভেঙে পড়ে ওই বধূর। কারণ টাকা ফেরত দেওয়ার মতো আর্থিক অবস্থা নেই তাঁদের। এর পর বধূর বিরুদ্ধে শান্তিপুর থানায় সরকারি প্রকল্পের অপব্যবহারের অভিযোগ দায়ের করেছেন বিডিও।
অভিযোগ জমা পড়ার পর থানায় ডেকে পাঠানো হয় বধূ ও তাঁর শাশুড়িকে। সংবাদমাধ্যমকে উত্তম দেবনাথের নাম বললেও থানায় সেকথা জানাননি তাঁরা। বিডিও জানিয়েছেন, হয় ওকে টাকা ফেরত দিতে হবে নইলে কে এই কাজ করেছে তার নাম বলতে হবে। নইলে আইনি পদক্ষেপ করা ছাড়া গতি নেই।
শেফালিদেবী বলেন, আমি তো লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য বলেছিলাম। উত্তম এসে আমাকে দিয়ে একটা ফর্ম ফিল আপ করিয়ে নিয়ে যায়। সেটা যে বিধবা ভাতার ফর্ম তা আমি জানতাম না। এসব উত্তমের কাজ।
এই ঘটনার পর পরেশ দেকে নিজেদের দলের কর্মী বলে মানতে অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতারা। ওদিকে স্থানীয় বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, নিজেদের লোককে পাইয়ে দিতে তৃণমূল জীবিত মানুষকে মৃত বলে ঘোষণা করতেও দুবার ভাবে না। তৃণমূল কর্মীরা ভাতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আগে থেকে টাকা নিয়ে নিচ্ছেন। তার পর মরিয়া হয়ে এক প্রকল্পের জায়গায় অন্য প্রকল্পের টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। এটাই চলছে রাজ্যজুড়ে।