হুগলির কোন্নগরে স্ত্রীকে খুন করে থানায় আত্ম সমর্পণ করলেন স্বামী। ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযুক্ত স্বামী অশোক চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার সকালে থানায় গিয়ে খুনের দায় স্বীকার করেছেন তিনি। অভিযোগ, আগের দিন রাতেই স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন অশোক। রাতভর বাড়ির ভেতরে দেহ রেখে সকাল হলেই বাড়িতে তালা দিয়ে বেরিয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন: স্বামীকে খুনের পর ড্রাম বন্দি দেহে নুন! সন্দেহে স্ত্রীর পরকীয়া, ঘটল কোথায়?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন্নগর মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা অশোকের বয়স প্রায় ৫৫। তাঁর স্ত্রী সবিতা চট্টোপাধ্যায়ের বয়স ৫৮। সংসার জীবনে নানা অশান্তি ছিল তাঁদের মধ্যে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, প্রায় প্রতিদিনই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত। মঙ্গলবার রাতেও সেই অশান্তি চরমে ওঠে। প্রতিবেশীরা স্পষ্টই ঝগড়ার শব্দ শুনেছেন। পরে সব কিছু স্তব্ধ হয়ে যায়। পুলিশ জানায়, বুধবার ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রথমে দিদির বাড়িতে যান অশোক। দেখা হতেই তাঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে সোজাসাপ্টা বলে দেন, স্ত্রীকে মেরেছেন, এখন থানায় যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, ত্রিবেণীতে থাকা আর এক দিদিকেও ফোনে একই কথা জানান তিনি। এই খবরে মুহূর্তেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। আতঙ্কিত আত্মীয়রা দ্রুত বিষয়টি জানিয়ে দেন স্থানীয়দের। খবর পৌঁছে যায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিশ্বরূপ চক্রবর্তীর কাছেও।
এরপর উত্তরপাড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। বাড়ির দরজায় তালা ঝুলছিল। তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকতেই পুলিশ দেখতে পায়, মেঝেতে পড়ে আছে সবিতা দেবীর নিথর দেহ। পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে অশোক নিজেই জানিয়েছেন, শ্বাসরোধ করেই তিনি স্ত্রীকে খুন করেছেন।
প্রতিবেশীদের মতে, অশোক বর্তমানে কোনও কাজ করতেন না। সংসারে অর্থকষ্ট ছিল। তার উপর প্রচুর ঋণও হয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে। সেই আর্থিক চাপে নিত্যদিন অশান্তি লেগেই থাকত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। তবে আর্থিক টানাপোড়েন ছাড়াও অন্য কোনো কারণ জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
কোন্নগর পুরসভার প্রাক্তন কর্মী ছিলেন অশোক। তাঁর দিদি চন্দনা চট্টোপাধ্যায়, খুড়তুতো দাদা সহৃদ চট্টোপাধ্যায় এবং বৌদি লীনা চট্টোপাধ্যায় সকলেই জানিয়েছেন, এই দম্পতির মধ্যে প্রতিদিনই অশান্তি চলত। মঙ্গলবার সেই অশান্তিই শেষ পর্যন্ত খুনের রূপ নিল। গোটা ঘটনায় এলাকায় তীব্র শোরগোল পড়ে যায়। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ।