উত্তর ২৪ পরগনার একটি খুনের মামলার বিচার প্রায় শেষ পর্বে। সেই আবহে হঠাৎ করেই অভিযুক্ত পক্ষ নতুন আবেদন নিয়ে হাজির হয় আদালতে। তাঁরা বিচার প্রক্রিয়া অন্য এজলাসে স্থানান্তরিত করার আর্জি জানান। সেই আর্জি শুনেই ক্ষোভে ফেটে উঠলেন বিচারক। এই আর্জিকে ‘অযৌক্তিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মন্তব্য করে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন।
আরও পড়ুন: রিসেপশনিস্ট অঙ্কিতা হত্যাকাণ্ড! বিজেপি নেতার পুত্র-সহ ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁর দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক প্রদীপকুমার অধিকারী এই মামলার শুনানিতে অভিযুক্তদের আবেদনের কঠোর বিরোধিতা করেন। বিচারকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এই আবেদন মামলার রায় এড়ানোর জন্য। বিচারক স্পষ্ট জানান, যখন মামলার শুনানি শেষ পর্যায়ে, প্রায় সমস্ত সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ তখন হঠাৎ করে এজলাস পরিবর্তনের দাবি করা শুধুমাত্র বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতেই করা হয়েছে।
এই ঘটনাকে আদালতের সময় নষ্ট করার উদ্দেশ্য বলে মনে হয়েছে বিচারকের। তারপরেই তিনি অভিযুক্তদের তিনজনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি সেই টাকা দুঃস্থদের আইনি সহায়তার জন্য লিগ্যাল এইড ফান্ডে জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেন।
মামলার বয়ান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানা এলাকায় একটি নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তিনজনকে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করে। তাঁদের মধ্যে একজন বর্তমানে জেল হেফাজতে থাকলেও, বাকি দু’জন জামিনে মুক্ত। মামলা শুরু হলে সরকার পক্ষ মোট ২০ জনকে সাক্ষী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। ইতিমধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে এবং বর্তমানে তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এই সময়েই অভিযুক্তরা হঠাৎ করে আদালত পরিবর্তনের আবেদন করেন। তাঁদের আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়। তাতেই ক্ষুব্ধ হন বিচারক। আইনজীবী মহলের মতে, বিচারকের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে দৃষ্টান্তমূলক। এটি ভবিষ্যতের মামলাগুলিতে ভুল উদ্দেশ্যে আদালতের সময় নষ্ট করতে চাওয়া অভিযুক্তদের প্রতি এক সতর্ক বার্তা হয়ে থাকবে।