আবারও নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের খালবোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। ফের অসুস্থ হয়ে পড়ল একাধিক ছাত্রী। ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। শনিবার ফের সাত থেকে আটজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে খবর। শেষ পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল স্কুলের সপ্তম ও নবম শ্রেণির নির্দিষ্ট দুটি শ্রেণিকক্ষ।
আরও পড়ুন: ৫ মাস আগে কলকাতার নামী স্কুলের ছাত্রীকে ‘গণধর্ষণ’, FIR হতেই গ্রেফতার ৩ ‘বন্ধু’!
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার যেসব ছাত্রী অসুস্থ হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকে আগের দিন অর্থাৎ শুক্রবারও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। পরপর দু’দিনে একাধিক ছাত্রীকে চিকিৎসার জন্য শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে। স্কুলে পড়ুয়াদের এই বারংবার অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে অভিভাবক থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত অসুস্থ ছাত্রীদের মধ্যে মোট ১৩ জনকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুইজনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে চিকিৎসকদের আশ্বাস, সকলেই স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।
ঘটনার পর শনিবার সকালে কৃষ্ণগঞ্জের বিডিও সৌগত সাহা এবং কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার ডিএসপি শিল্পী পাল স্কুলে পৌঁছন। স্কুলের পরিকাঠামো, শ্রেণিকক্ষ এবং আশপাশ ঘুরে দেখেন আধিকারিকরা। স্কুলের যেসব দুই শ্রেণিকক্ষে সমস্যা দেখা দিয়েছে, সেগুলিকে আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং অন্যত্র ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল, স্কুল লাগোয়া একটি সোকপিট থেকে আসা দুর্গন্ধই ছাত্রীদের অসুস্থতার কারণ হতে পারে। কিন্তু, আধিকারিকরা শনিবার পরিদর্শনে গিয়ে দেখতে পান, সেই সোকপিট প্রায় শুকিয়ে গিয়েছে এবং দুর্গন্ধের কোনও স্পষ্ট প্রমাণ মেলেনি। ফলে ছাত্রীরা ঠিক কী কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা আরও ঘনীভূত হয়েছে।
তবে প্রশাসনের অনুমান, এই অসুস্থতা হয়তো মানসিক চাপ বা আতঙ্কজনিত অর্থাৎ ‘প্যানিক রিঅ্যাকশন’। বিডিও সৌগত সাহা বলেন, শুক্রবার প্রাথমিক চিকিৎসার পর যাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, শনিবার তারা স্কুলে এসেই আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। আপাতত ক্লাসগুলি অন্যত্র স্থানান্তরিত হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা দফতরের তরফে পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য দফতরকে যুক্ত করে আরও বিস্তারিত পরীক্ষা করারও ভাবনা রয়েছে।