করোনার ছোবলে ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল ব্যবসার। তলানীতে ঠেকেছিল বিক্রিবাটা। ফলে, ধারদেনাও করতে বাধ্য হয়েছিলেন। আয়ের পথ বন্ধ হওয়ায়, মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। অবশেষে আত্মঘাতী হলেন এক ফলবিক্রেতা। স্বামীর মৃত্যুর খবর পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন তাঁর স্ত্রীও। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা গ্রামে।ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলকোটের ইছাবটগ্রামের বাসিন্দা মৃত ওই ফলবিক্রেতার নাম উৎপল দাস(৩৫)। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রী ও নাবালক দুই সন্তানকে নিয়ে ওই এলাকায় একটি ভাড়া ঘরে থাকতেন উৎপল। ব্যবসার মালপত্র রাখার জন্য বাজারের একটি দোকান ঘর ভাড়াও নিয়েছিলেন তিনি। প্রত্যেকদিন স্থানীয় নতুনহাট বাজার এলাকায় ভ্যান চালিয়ে ফল ফেরি করতে যেতেন। গতবছর লকডাউনের সময় থেকেই তাঁর ব্যবসা লোকসানে চলছিল। বিক্রিভাটা বন্ধ হওযায়, জমানো পুঁজি ভেঙেই সংসার চালাচ্ছিলেন ওই ব্যবসায়ী। চলতি বছরের শুরুতে স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখে পুনরায় ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু করোনার জন্য বিধিনিষেধ জারি হওয়ার পর থেকে ফের ক্ষতির মুখে পড়েন উৎপল। পড়শিরা জানিয়েছেন, বারবার বন্ধক রাখা গয়না ছাড়াতে বলতেন স্ত্রী পুতুল। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদও বেধে যেত। ঘটনার সকালে বাজারের ওই দোকানে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উৎপলের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। তারাই পুলিশে খবর দেন। ঘটনাস্থলে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ উপস্থিত হয়। তারপর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ।ঘটনার বিষয় জানতে পেরে দোকানে ছুটে যান পুতুলদেবী। সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই মহিলা। কাঁদতে কাঁদতে আচমকাই রাস্তায় চলন্ত লরির সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। তবে লরির গতি কম থাকায়, প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন ওই মহিলা। জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে মঙ্গলকোট ব্লক হাসপাতালে ভরতি করা হয়।