পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরেই বাংলায় বেশ কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে আপত্তিকর পোস্ট করার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে বিজেপি। এবার এই প্রসঙ্গ তুলে পুলিশের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে গিয়ে বিতর্কে জড়ালেন বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার। সাধারণ মানুষকে হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার ডাক দিয়ে পুলিশকে আক্রমণের নিদান দিলেন বিজেপি বিধায়ক। বিজেপির হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকারকেও পুলিশের উদ্দেশে বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে। এই মন্তব্য সামনে আসতেই সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই ঘটনায় বিজেপির দুই বিধায়কের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন বলে খবর।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভে শঙ্কর, অগ্নিমিত্রা! ‘ঢুকতে দিন, আমি MLA!’ লালবাজারের দরজায় অশোক দিন্দা
মুর্শিদাবাদের ঘটনার প্রতিবাদে গত রবিবার গাইঘাটা ব্লকের ঘোঁজাবাজারে একটি পথসভার আয়োজন করেছিল বিজেপি। সেই সভাতে বক্তব্য রাখতে গিয়েই বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক বিতর্কিত মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘সনাতনীদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। আর পুলিশ তা দাঁড়িয়ে থেকে দেখছে। কেউ প্রতিবাদ করলেই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করছে। মিথ্যে মামলা দেওয়া হচ্ছে। উর্দি পরে পুলিশ ভাবছে তাঁদের হাতে সব রয়েছে।’ এরপরে তিনি সনাতনীদের জেগে ওঠার বার্তা দিয়ে উর্দিধারীদের কোপানোর নিদান দেন বলে অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘সকল সনাতনী জেগে উঠুন। হাতে অস্ত্র তুলে নিন। উর্দিধারীদের টেবিলের তলায় কুপিয়ে কুপিয়ে কাটুন।’
শুধু তাই নয়, এই পথসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অসীম সরকারও সাধারণ মানুষকে হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান। দুই বিধায়কের এমন বক্তব্য সামনে আসতেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূল এবং কংগ্রেস। তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের বক্তব্য, একজন জনপ্রতিনিধির মুখে এ ধরনের কথাবার্তা মানায় না। আগামী নির্বাচনে স্বপন মজুমদার জিততে পারবেন। সেই হতাশা থেকেই তিনি উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। একইসঙ্গে বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে মামলা করার দাবি জানিয়েছেন তৃণমূল নেতারা।
কংগ্রেসও বিধায়কের এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছে। দলের নেতাদের বক্তব্য, একজন বিধায়কের মুখে এই ধরনের কথাবার্তা শোভা পায় না। জানা গিয়েছে, এই মন্তব্য সামনে আসতেই গাইঘাটার একজন বাসিন্দা দুজন বিধায়ক সহ কয়েকজন বিজেপি নেতার নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন। যদিও রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য জানান, বিজেপি হিংসাকে সমর্থন করে না। এই সময় দায়িত্বশীল মন্তব্য করাই উচিত। তবে পুলিশের উচিত বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না হওয়া।