খেজুরিতে দুই যুবকের রহস্যমৃত্যুর তদন্তের সিবিআইয়ের উপর আস্থা নেই কলকাতা হাইকোর্টের। মঙ্গলবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ নির্দেশ দিয়েছেন, মামলার তদন্তভার যাবে রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডির হাতে। এজন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করতে হবে, যার নেতৃত্বে থাকবেন সিআইডির ডিআইজি। দলে যুক্ত থাকবেন হোমিসাইড শাখার আধিকারিকরাও। আগামী এক মাসের মধ্যে তদন্তের অগ্রগতি জানিয়ে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: খেজুরিতে জোড়া মৃত্যু মামলা, SSKM-এ দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
এই মামলায় সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছিলেন মৃতদের পরিবারের সদস্যরা। তবে সোমবারই সেই আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি। আদালতে তিনি স্পষ্ট মন্তব্য করেন, ‘সিবিআই এখন গ্যালারি শো করে!’ তিনি জানান, এই ঘটনায় রাজ্য পুলিশের উপরেই তাঁর আস্থা বেশি। তারই পরবর্তী ধাপে মঙ্গলবার সিআইডিকে দিয়ে সিট গঠন করে তদন্ত চালানোর নির্দেশ দিলেন বিচারপতি ঘোষ।
উল্লেখ্য, গত ১১ জুলাই মহরম উপলক্ষে খেজুরি থানার ভাঙনমারি গ্রামে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়েছিল। পরদিন সকালে অনুষ্ঠানস্থলের কাছেই উদ্ধার হয় দুই যুবক সুধীর পাইক ও সুজিত দাসের মৃতদেহ। পরিবারের দাবি, দু’জনের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে অনুষ্ঠানের আয়োজকরা ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। পাল্টা বিজেপি অভিযোগ তোলে, ধর্মীয় কারণে খুন করা হয়েছে ওই যুবকদের।
ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতর যত বাড়তে থাকে, বিতর্ক জোরদার হয় ময়নাতদন্ত নিয়েও। প্রথম রিপোর্টে পুলিশের দাবি ছিল, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই মৃত্যু। কিন্তু পরিবারের আবেদনে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তে মৃতদেহে একাধিক আঘাতের দাগের উল্লেখ করা হয়। একই দেহের ময়নাতদন্তে দুই রকম ফলাফল আসায় তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পরিজন ও বিরোধীরা। রাজনৈতিক চাপানউতর, বিরোধী অভিযোগ এবং দুই দফায় বিপরীত ময়নাতদন্ত রিপোর্টের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এবার সিআইডিকে তদন্তভার দিল। আদালতের মতে, রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থার তত্ত্বাবধানেই জোড়া মৃত্যুর আসল রহস্য উন্মোচন হবে।