বাংলা নিউজ > ময়দান > অলিম্পিক্স > আর বন্দুক তুলতে পারবে না!৬ বছর আগে করা ডাক্তারদের কথাকে ভুল প্রমাণিত করে প্যারিসে উজ্জ্বল পারফরম্যান্স অর্জুন বাবুটার
পরবর্তী খবর
আর বন্দুক তুলতে পারবে না!৬ বছর আগে করা ডাক্তারদের কথাকে ভুল প্রমাণিত করে প্যারিসে উজ্জ্বল পারফরম্যান্স অর্জুন বাবুটার
অর্জুন বাবুটার কাহিনীটাই আলাদা। আজ থেকে ছয় বছর আগে ডাক্তাররা তাঁকে বলেছিলেন তিনি আর বন্দুক ধরতে পারবেন না।সেখান থেকে ডাক্তারদের ভুল প্রমান করে তিনি লড়াই লড়ে ফিরে এসেছেন। প্যারিস অলিম্পিক গেমসে চতুর্থ স্থানে শেষ করার যে সেটব্যাক,তা তাঁর কাছে কাটিয়ে ওঠা কোন ব্যাপার নয় বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
অর্জুন বাবুটা। ছবি- উই আর ইন্ডিয়া (এক্স)
শুভব্রত মুখার্জি:- সোমবার চলতি প্যারিস অলিম্পিক গেমসে কোন পদক পায়নি ভারত। পদকের দোড়গোড়ায় পৌঁছে গিয়েও পদক অধরা থেকে গিয়েছে ভারতীয় শুটার অর্জুন বাবুটার। অলিম্পিক গেমসের ইতিহাসে সবথেকে 'কঠিনতম' স্থান অর্থাৎ চতুর্থ স্থানে শেষ করেছেন তিনি। একটুর জন্য আরো একটি ব্রোঞ্জ পদক হাতছাড়া হয়েছে ভারতের। পুরুষদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের ফাইনালে একটা সময়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন বাবুটা। সেখান থেকে তিনি শেষ করেছেন চতুর্থ স্থানে।গোটা দেশ তো বটেই ব্যক্তি অর্জুন বাবুটার কাছেও যা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। এখান থেকে পরবর্তীতে কামব্যাক করাটা অত্যন্ত কঠিন।
কিন্তু অর্জুন বাবুটার কাহিনীটাই আলাদা। আজ থেকে ছয় বছর আগে তাঁর ডাক্তাররা তাঁকে বলেই দিয়েছিলেন যে তিনি আর বন্দুক ধরতেই পারবেন না।সেখান থেকে দাঁড়িয়ে ডাক্তারদের ভুল প্রমান করে তিনি যে লড়াইটা লড়ে ফিরে এসেছেন তাতে করে প্যারিস অলিম্পিক গেমসে চতুর্থ স্থানে শেষ করার যে সেটব্যাক তা তাঁর কাছে কাটিয়ে ওঠা কোন ব্যাপার নয় বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। ঠিক কি ঘটেছিল বাবুটার জীবনে? আসুন জেনে নেওয়া যাক এক চ্যাম্পিয়নের নেপথ্য সংগ্রামের কাহিনী।
২৫ বছর বয়সী বাবুটা চন্ডীগড়ের বাসিন্দা। তাঁর লোয়ার ব্যাক অর্থাৎ কোমর অঞ্চলে সমস্যা দেখা দিয়েছিল বছর ছয়েক আগে । তাঁর ছোট্ট বয়সে অতিরিক্ত অনুশীলন করার কারণেই তাঁকে এই সমস্যাতে পড়তে হয়। কারণ বন্দুকের একটা ওজন রয়েছে। ফায়ার অর্থাৎ শুট করার সময়ে তার একটা ওজন বহন করতে হয় শুটারের বডিতে। একদিন শুটিং রেঞ্জে অনুশীলন করার সময়ে তিনি পড়ে যান। তাঁকে জলদি জলদি নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। ২০১৮ সাল থেকেই নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন বাবুটা। একাধিক ডাক্তারকে দেখান তিনি। কারণ অনেক সময়েই এমন হচ্ছিল শুটিং করতে গিয়ে তিনি পড়ে যাচ্ছিলেন। বাবুটা যখন রাইফেলে তাঁর লক্ষ্য স্থির করছিলেন এই সময়ে অনেকবার তাঁর লোয়ার বডি কোলাপস(ভেঙে) করে যাচ্ছিল।
বাবুটা বিষয়টি নিয়ে বলতে গিয়ে জানিয়েছেন ' ২০১৮ সালে যখন সিনিয়র দলে আমার নির্বাচন হয় তখন আমার বয়স মাত্র ১৯ বছর। আমি সেইসময়ে ভালো পারফরম্যান্স করছিলাম। কিন্তু পাশাপাশি প্রচুর অনুশীলনও শুরু করি। আমি নিজের শরীরকে বিশ্রাম দেওয়া বা রিকোভারির পর্যাপ্ত সময় দিতাম না। আমাকে গাইড করার মতন কেউ ছিল না। আমার মতে আমার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা এবং আমাকে গাইড করার লোকের অভাবে আমার ওই সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। আমি শুটিং করতে গিয়ে চেন্নাইয়ের গান ফর গ্লোরি অ্যাকাদেমিতে পড়ে যাই। আমার কোচ দিপালি দেশপান্ডে আমাকে তুলে নিয়ে হাসপাতালে ছোটেন।সেখানে আমার পরীক্ষা করা হয়।এখান থেকে আমার রিহ্যাবের সফর শুরু হয়। আমি ভারতবর্ষে একাধিক ডাক্তারকে দেখাই। অনেকেই আমাকে বলেন আমি আর শুটিং করতে পারব না। ফিজিওর কাছে সেই সময়ে আমি রিহ্যাব শুরু করি। আমি প্রতিদিন আমার মা'কে নিয়ে পাতিয়ালা থেকে চন্ডীগড় যেতাম।২০১৯ সালে সেই সময়ে ৫-৬ মাস চলে আমার রিহ্যাব।সেই কারণে আমি টোকিও অলিম্পিক গেমসে নির্বাচিত হতে পারিনি'।
বাবুটা আরও জানান, ' প্রথম দিকে আমি টোকিও অলিম্পিক্সের নির্বাচনের যোগ্যতা অর্জনকারীদের তালিকায় ছিলাম। আমি খুব ভেঙে পড়েছিলাম। তবে এটা আমাকে সাহায্য করে। আমি সময় পেয়ে যাই আমার শরীরকে নতুনভাবে গড়ার। করোনার সময়ে লকডাউনে আমার বেশ সাহায্য হয়। সেই সময়ে বাড়িতে আমি শুটিং রেঞ্জ তৈরি করি অনুশীলনের জন্য। ' আর এইভাবেই ফিরে আসার লড়াই শুরু করেন বাবুটা। যে ছেলেটাকে ডাক্তাররা ছয় বছর আগে বলে দিয়েছিলেন তিনি কোনদিন আর শুটিং করতে পারবেন না তিনিই প্যারিস অলিম্পিক গেমসের মঞ্চে হয়ে উঠেছেন ভারতীয় শুটিংয়ের জগতের নয়া নক্ষত্র।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।