অর্ধেক লিগ অভিযান শেষে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়িয়ে অতীতে আইপিএলের ফাইনালে ওঠার নজির রয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের। ২০২১ সালে নিজেদের প্রথম ৭টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র ২টিতে জয় তুলে নেন নাইট রাইডার্স। হারে ৫টি ম্যাচ। সেবার নিজেদের আট নম্বর ম্যাচে আরসিবিকে হারিয়ে পালটা লড়াই শুরু করে কেকেআর। শেষ সাতটি ম্যাচের মধ্যে ৫টি জিতে কেকেআর প্রথমে প্লে-অফে জায়গা করে নেয় এবং পরে ফাইনালের টিকিট পকেটে পোরে। যদিও খেতাবি লড়াইয়ে সিএসকের কাছে হারতে হয় নাইটদের।
এবারও ছবিটা হুবহু একই রকমের। এবারও কলকাতা প্রথম ৭টি ম্যাচের ২টিতে জেতে এবং ৫টি ম্য়াচ হারে। এবারও লিগে নিজেদের আট নম্বর ম্যাচে আরসিবিকে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু করে কেকেআর। সুতরাং, এবারও তারা ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটালে অবাক হওয়াক কিছু থাকবে না। আপাতত প্রথম ৮টি ম্যাচের পরে কলকাতার সার্বিক পারফর্ম্যান্সে ফিরে তাকানো যাক।
হার-জিত: ৮ ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্স জয় তুলে নিয়েছে ৩টি এবং হেরেছে ৫টি ম্যাচ।
পয়েন্ট টেবিলে অবস্থান: ৮ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের সাত নম্বরে অবস্থান করছে কেকেআর।
সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী: ৮ ম্যাচে ব্যাট করতে নেমে বেঙ্কটেশ আইয়ার কলকাতার হয়ে সব থেকে বেশি ২৮৫ রান সংগ্রহ করেছেন।
সর্বাধিক উইকেটশিকারী: বরুণ চক্রবর্তী নাইট রাইডার্সের হয়ে এখনও পর্যন্ত সব থেকে বেশি ১৩টি উইকেট নিয়েছেন।
সব থেকে বেশি ছক্কা: কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে সব থেকে বেশি ১৮টি ছক্কা মেরেছেন রিঙ্কু সিং।
সর্বোচ্চ দলগত ইনিংস: কেকেআর চলতি মরশুমে এখনও পর্যন্ত গুজরাট টাইটানসের বিরুদ্ধে ৭ উইকেটে হারিয়ে সব থেকে বেশি ২০৭ রান সংগ্রহ করে।
ঘরের মাঠে জয়: কেকেআর ঘরের মাঠে মাত্র ১টি ম্যাচ জিতেছে। তারা ইডেনে পরাজিত করে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে।
অ্যাওয়ে ম্যাচ জয়: কেকেআর ২টি অ্যাওয়ে ম্যাচে জয় তুলে নেয়। তারা আমদাবাদে হারায় গুজরাট টাইটানসকে এবং বেঙ্গালুরুতে হারিয়ে দেয় আরসিবিকে।
ঘরের মাঠে হার: নাইট রাইডার্স ঘরের মাঠে পরাজিত হয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে।
অ্যাওয়ে ম্যাচে হার: কেকেআর অ্যাওয়ে ম্যাচে পরাজিত হয় পঞ্জাব কিংস, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও দিল্লি ক্যাপিটালসের কাছে।
প্রথমে ব্যাট করে জয়: কলকাতা শুরুতে ব্যাট করে ২টি ম্যাচ জেতে। ইডেনে ও চিন্নাস্বামীতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে তারা প্রথমে ব্যাট করে পরাজিত করে।
রান তাড়া করে জয়: নাইট রাইডার্স একটি ম্যাচে রান তাড়া করে জয় তুলে নেয়। তারা আমদাবাদে গুজরাট টাইটানসের ঝুলিয়ে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করে ম্যাচ জেতে। রিঙ্কু সিং শেষ ৫ বলে ৫টি ছক্কা মেরে ম্যাচ জেতান কেকেআরকে।
সেরা পাঁচ রান সংগ্রহকারী:
১. বেঙ্কটেশ আইয়ার- ২৮৫
২. রিঙ্কু সিং- ২৫১
৩. নীতীশ রানা- ২২৯
৪. জেসন রয়- ১৬০
৫. আন্দ্রে রাসেল- ১০৮
সেরা পাঁচ উইকেটশিকারী:
১. বরুণ চক্রবর্তী- ১৩
২. সুয়াশ শর্মা- ৯
৩. সুনীল নারিন- ৬
৪. আন্দ্রে রাসেল- ৫
৫. নীতীশ রানা- ২
প্রধান সমস্যা: কলকাতা নাইট রাইডার্স মন্দ ক্রিকেট খেলছে না। তবে ধারাবাহিকতার অভাব চোখে পড়ছে তাদের খেলায়। প্রতি ম্যাচে দলগতভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারছে না নাইট রাইডার্স। তাদের RRR-এর মধ্যে রিঙ্কু ও রানা দুরন্ত ক্রিকেট উপহার দিচ্ছেন। রাসেলকে ব্যাট হাতে এখনও চেনা মেজাজে দেখা যায়নি। এমনটা নয় যে, তিনি দলের পারফর্ম্যান্সে অবদান রাখছেন না। বরং ব্যাটে-বলে সুযোগ মতো নজর কাড়ছেন দ্রে রাস। তবে একার হাতে ম্যাচ জিতিয়ে দেওয়ার মতো দাপট এখনও দেখাতে পারেননি তিনি। তাছাড়া কেকেআর এখনও সঠিক ওপেনিং জুটি খুঁজে পায়নি। সুনীল নারিন ৮ ম্যাচে ৬টি উইকেট নিলেও আগের মতো কার্যকরী দেখাচ্ছে না তাঁকে।
সমাধানের উপায়: জেসন রয় ওপেনে নির্ভরতা দিচ্ছেন। সুতরাং, তাঁর সঙ্গে কোনও ভারতীয় তারকাকে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলতে হবে শুরুতে। রাসেলকে ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে হবে। কেননা কলকাতার পাওয়ার হিটিং অনেকটাই নির্ভর করে দ্রে রাসের উপরে। কেকেআর তাঁকে ফিনিশারের ভূমিকায় দেখতে চায়। ভারতীয় পেসারদের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে হবে স্পিনারদের সঙ্গে। বরুণ ও সুয়াশ দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন। উমেশ-শার্দুলরা সহযোগিতা করলে কলকাতার বোলিং আক্রমণকে শক্তিশালী দেখাবে।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক http://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।