উৎকর্ষ আনন্দসমাজকে ভিন্ন বর্ণ এবং ধর্মে বিয়ের মেনে নিতে শিখতে হবে। কর্নাটকের এক দম্পতির মামলায় এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে বিচারপতি এস কে কৌল এবং বিচারপতি হৃষিকেশ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার জানিয়েছে, স্রেফ নিজেদের বর্ণ বা ধর্মের বাইরে বিয়ে করার জন্য নিজেদের ছেলেমেয়েদের পরিত্যাগ করার বিষয়টি কাঙ্ক্ষিত সামাজিক প্রথা নয়।এরকম ‘সামাজিকভাবে সংবেদনশীল মামলা’ সামলানোর জন্য পুলিশকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং নির্দিষ্ট নিয়মাবলী থাকার উপর জোর দিয়েছেন বিচারপতিরা। যাতে বাবা-মা এফআইআর দায়ের করলে দম্পতিরা আইনের আওতায় উপযুক্ত নিরাপত্তা পান। ডিভিশন বেঞ্চের মত, ‘শিক্ষিত যুবক এবং যুবতিরা বেশি করে নিজেদের সঙ্গী বেছে নিচ্ছেন।’ যা সমাজের নিয়ম থেকে বিচ্যুতি বলে মনে করতে পারেন মা-বাবা। কিন্তু কোনও আইন ভঙ্গ না হলে এরকম দম্পতিদের যাতে কোনওরকম ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে বাধ্য পুলিশ।কর্নাটকের এক দম্পতির মামলায় সেই মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত। যাঁরা মহিলার বাবার দায়ের করা ফৌজদারি মামলায় সুরক্ষাকবচ প্রদানের আর্জি জানিয়েছিলেন। একটি কলেজে সহকারী অধ্যাপক এবং লেকচারার হিসেবে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন কর্নাটকের ওই মহিলা (২৮) এবং উত্তরপ্রদেশের এক ব্যক্তি (২৬)। তাঁরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। তারপর নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেছিলেন মহিলার বাবা। যা কর্নাটকের বেলাগাভিতে এফআইআরে পরিবর্তিত করা হয়। তারইমধ্যে সুরক্ষার আর্জি শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন দম্পতি। গত বছর ডিসেম্বরে এফআইআরে স্থগিতাদেশ দেয় সুুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে কর্নাটক সরকারের জবাব তলব করে। সোমবার সেই মামলায় শুনানি হয়। দু'পক্ষের তরফে সওয়াল-জবাব করা হয়। পুলিশের ভূমিকায় খুশি হয়নি সুপ্রিম কোর্ট। তদন্তকারী অফিসারের কাউন্সেলিংয়ের হওয়া উচিত বলে জানায়। একইসঙ্গে এই ধরনের মামলা সামলানোর জন্য কর্নাটক সরকারকে সব পুলিশ আধিকারিকদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের বিষয়টি চিন্তাভাবনা করতে বলে। ডিভিশন বেঞ্চের খেদ, মহিলা এবং ব্যক্তি - দু'জনেই উচ্চশিক্ষিত, স্বাধীন হওয়া সত্ত্বেও নিজেদের মেয়ের পছন্দের বিরোধিতা করেছেন মহিলার মা-বাবা। একইসঙ্গে খারিজ করে দেওয়া হয় এফআইআর। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, দু'জন প্রাপ্তবয়স্ক নিজেদের ইচ্ছায় একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুধুমাত্র মা-বাবা সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় তাঁদের ফৌজদারি ধারায় অভিযুক্ত করা যাবে না।