গত নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার কমেছিল কিছুটা। তবে তুলনামলক ভাবে দেখতে গেলে গত কয়েক বছরে খাদ্য সামগ্রী থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব বস্তুরই দাম অনেকটা করে বেড়েছে। এই আবহে একটা ধারণা তৈরি হয়েছে যে নিম্নবিত্তদের পকেটে টান পড়েছে। এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে রাজনীতির ময়দানে ঝড় তোলরও চেষ্টা করেছে বিরোধীরা। তবে তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। কেন্দ্রে বিজেপির সরকার টিকে গিয়েছে গত লোকভায়। এদিকে মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডের মতো বিভিন্ন রাজ্যে সেখানকার সরকারও বিধানসভা ভোটের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এই আবহে ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক অফিসের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, কোথায় হাতটান? নিম্নবিত্তের খরচ তো বেড়েছে। এই আবহে প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্রের কিষাণ সম্মান যোজনা, বা বিভিন্ন রাজ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো প্রকল্পই কি গরিবদের হাতটান থেকে রক্ষা করছে? এরই সঙ্গে তাঁদের খরচও বাড়ছে তুলনামূলক ভাবে? (আরও পড়ুন: হোঁচট খেলেন ট্রাম্প, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের নির্দেশিকায় আদালতের স্থগিতাদেশ)
আরও পড়ুন: বিরোধ অল্টম্যানের সঙ্গে, তাই ট্রাম্পের ঘোষিত $১০০ বিলিয়নের প্রকল্পকে হেয় ইলনের?
ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অগস্ট থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত গ্রামীণ ভারতে মাসিক 'গৃহস্থালী খরচ' ছিল ৪১২২ টাকা। গত ১১ বছরে গ্রামে 'গৃহস্থালী খরচ' বেড়েছে ৯.২ শতাংশ। এদিকে শহরে এই একই সময়কালে পরিবার পিছু মাসিক গড় খরচ ৬৯৯৬ টাকা। গত ১১ বছরে শহরে অবশ্য মাসিক খরচ বেড়েছে ৮.৫ শতাংশ হারে। অর্থাৎ, গ্রামের বাসিন্দারা আরও বেশি বেশি হারে পণ্য ক্রয় বাড়িয়েছেন তাদের। ২.৬১ পরিবারে এই সমীক্ষা চালিয়েছে এনএসও। এদিকে সাম্প্রতিককালে শেয়ার বাজারে ধারণা তৈরি হয়েছে, মুদ্রাস্ফীতির হারের জেরে গরিবদের পকেটে চাপ বাড়ছে এবং তাদের খরচের সামর্থ কমছে। তবে সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে এনএসও-র এই সমীক্ষায়। দেখা যাচ্ছে, সমাজের সবচেয়ে নীচের স্তরের লোকেদের খরচ বেড়েছে। এদিকে সমাজের সর্বোচ্চ স্তরে থাকা মানুষদের খরচ কমেছে। দেখা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের তুলনায় শহরের নিম্নিত্তদের মাসিক খরচ ৩৭৫ টাকা করে বেড়েছে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে। আর গ্রামে এটা বেড়েছে ৩০৪ টাকা করে। এই আবহে অনুমান করা হচ্ছে, নানান সরকারি প্রকল্পের সুবিধা সরাসরি উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে যাওয়ায় নিম্নিত্তদের খরচে টান পড়ছে না। বরং মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়েই যেন বাড়ছে তাদের খরচ।