নতুন বছর শুরুর আগেই খুশির খবর! সবকিছু ঠিকঠাক চললে খুব শীঘ্রই শুরু হবে ভারত-ভুটান রেলপথ নির্মাণের কাজ। অনুমান করা হচ্ছে, আগামী অর্থবর্ষেই (২০২৫-২৬) এই কাজ শুরুর করার অনুমোদন পাওয়া যাবে।
উত্তরবঙ্গ সংবাদ-এর অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ইতিমধ্য়েই অসমের কোকরাঝাড় থেকে ভুটানের গেলেফু শহর রেললাইন বসানোর জন্য সমীক্ষার কাজ শেষ করা হয়েছে। এই রুটের দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৩ কিলোমিটার।
আপাতত এই রুটে রেলপথ নির্মাণের জন্য 'ডিটেলড প্রোজেক্ট রিপোর্ট' বা ডিপিআর তৈরির কাজ চলছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ডিপিআর তৈরির প্রক্রিয়া শেষ হলেই প্রকল্প রূপায়ণের ছাড়পত্র পাওয়া যাবে। যদিও রেলের তরফে নির্দিষ্টভাবে এখনও পর্যন্ত এর জন্য কোনও সময় ঘোষণা করা হয়নি।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের সিপিআরও কপিঞ্জলকিশোর শর্মাকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়েছে, 'কোকরাঝাড় থেকে গেলেফু পর্যন্ত রেলরুটের সমীক্ষার কাজ ইতিমধ্য়েই শেষ করা হয়েছে। ডিপিআর-এর কাজ চলছে। সেই কাজ শেষ হলে তা রেল বোর্ডের কাছে পাঠানো হবে।'
রেলের তরফে আরও জানা গিয়েছে, আসলে ভারত-ভুটান সরাসরি রেলপথ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। কারণ, তাতে আমজনতা, পর্যটকরা যেমন উপকৃত হবেন, তেমনই দুই দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য আরও সহজ ও সম্প্রসারিত হবে। ভুটানের সঙ্গে আরও পোক্ত হবে ভারতের সম্পর্ক।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতের সঙ্গে ভুটানের সরাসরি রেল যোগাযোগ গড়ে তুলতে প্রাথমিকভাবে পাঁচটি সম্ভাব্য রুটের কথা ভাবা হয়েছিল।
এগুলির মধ্য়ে অসম থেকে ভুটান পর্যন্ত তিনটি রুটে ট্রেন চালানোর সম্ভাবনা উঠে আসে। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলা থেকে একটি করে সম্ভাব্য রুট নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। অন্যদিকে, অসম থেকে ভুটান পর্যন্ত প্রস্তাবিত রেলরুটগুলির মধ্য়ে অন্যতম ছিল কোকড়াঝাড়-গেলেফু। শেষ পর্যন্ত সেই রুটটিকেই বেছে নেয় রেল মন্ত্রক।
এরপর, ভারত ও ভুটান - দুই দেশের সম্মতিক্রমে ২০২২ সাল থেকে এই রুটে সমীক্ষার কাজ শুরু করে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল।
প্রায় দুই বছর ধরে ধাপে ধাপে সেই সমীক্ষার কাজ চলে। অবশেষে, ফাইনাল লোকেশন সার্ভের কাজ শেষ হয় গত নভেম্বর মাসে। এরপর ডিপিআর তৈরির কাজ শেষ হলে এবং তার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সরকারি অনুমোদন পাওয়া গেলেই টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
সূত্রের দাবি, এই প্রেক্ষাপটে যদি আগামী অর্থবর্ষেই এই রুটের জন্য বাজেট বরাদ্দ করা হয়, তাহলে শীঘ্রই ভারত-ভুটান রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে যাবে।
তথ্যাভিজ্ঞ মহলের হিসাব বলছে, সরাসরি রেলরুট চালু হলে অসমের কোকরাঝাড় থেকে ভুটানের গেলেফু পৌঁছতে ঘণ্টা খানেক সময় লাগবে। তাছাড়া, এই রুটে দুই দেশের মধ্য়ে পণ্য পরিবহণও শুরু করা যাবে। তাতে পরিবহণ খরচ কমবে এবং সময় বাঁচবে। যার জেরে লাভবান হবে দুই পক্ষই।