প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংকে কেন্দ্রীয় সরকার অপমান করেছে বলে শুক্রবার থেকেই সুর চড়াতে শুরু করেছে কংগ্রেস। এই ইস্যুতে দলের প্রবীণ নেতাদের পাশাপাশি সরব হয়েছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও।
দলের অন্য়ান্য শীর্ষ নেতার মতো রাহুলেরও বক্তব্য হল, ড. মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্যের রীতি পালনের জন্য নিগম বোধ ঘাটে যাবতীয় বন্দোবস্ত করা হয়। কিন্তু, মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য করার জন্য বা সেই শেষকৃত্যস্থলে তাঁর স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য নিগম বোধ ঘাট মোটেও যোগ্য স্থান নয়।
রাহুলের মতে মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য এবং স্মৃতিসৌধ নির্মাণ দেশের 'সবথেকে মর্যাদাসম্পন্ন' কোনও স্থানেই হওয়া উচিত ছিল।
বিষয়টি নিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্টও করেছেন রাহুল গান্ধী। হিন্দিতে তিনি লিখেছেন, ‘ভারতমাতার মহান সন্তানকে অপমান করেছে বর্তমান সরকার। ড. মনমোহন সিংজি শিখ সম্প্রদায়ের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। নিগম বোধ ঘাটে তাঁর শেষকৃত্যের আয়োজন করে তাঁকে অসম্মান করা হয়েছে।’
রাহুল আরও স্মরণ করিয়ে দেন, মনমোহন সিং টানা ১০ বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি ছিলেন বলেই আজ ভারত বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক সুপার পাওয়ার হতে পেরেছে।
এই প্রসঙ্গে রাহুল গান্ধী লেখেন, 'আজ পর্যন্ত, দেশের যতজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্য করা হয়েছে, সেগুলি এমন কোনও জায়গায় করা হয়েছে, যাতে সেখানেই তাঁদের সমাধিস্থল নির্মাণের অনুমোদন থাকে এবং যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি কোনও সমস্য়া ছাড়াই সেই মানুষটিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারেন।'
রাহুল গান্ধীর সরাসরি অভিযোগ, মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য করার ক্ষেত্রে সেই রীতি মানেনি বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁর বক্তব্য, প্রয়াত কংগ্রেস নেতার প্রতি এটুকু সম্মান অবশ্যই দেখাতে পারত বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার।
রাহুল এই বিষয়ে আরও লেখেন, 'ড. মনমোহন সিং আমাদের সর্বোচ্চ সম্মান এবং সবথেকে সম্মানজনক সমাধিস্থল পাওয়ার যোগ্য। দেশের এই মহান সন্তানের প্রতি সরকারের আরও একটু সম্মান দেখানো উচিত ছিল। যিনি তাঁর সম্প্রদায়কে গর্বিত করেছিলেন।'
প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের তরফে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি করা হয়েছিল, ড. মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য এমন কোনও জায়গায় করা হোক, যেখানে তাঁর স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা যায়। বিষয়টি নিয়ে বৈঠকের সরকারের তরফে জানানো হয়, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
কিন্তু, শেষমেশ নিগম বোধ ঘাটে মনমোহনের শেষকৃত্য সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বলা বাহুল্য কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত একেবারেই পছন্দ হয়নি কংগ্রেস শিবিরের। ফলত, লাগাতার এই ইস্যুতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে চলেছে তারা।