নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল অসম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অসমে এক কলাম সেনাকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সন্ধ্যা থেকেই গুয়াহাটিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু জারি করা হয়েছে। গুজব ছড়ানো আটকাতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ১০ টি জেলায় আজ সন্ধ্যে সাতটা থেকে আগামীকাল সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে সামিল হয়েছে অসম। লোকসভায় বিল পেশের দিন থেকেই আরও বাড়ে বিক্ষোভের মাত্রা। গত দু'দিন বিভিন্ন সংগঠনের ডাকা বনধের প্রভাবও সর্বাত্মক পড়েছিল। আজ সকালেও উত্তপ্ত ছিল অসমের পরিস্থিতি। একদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন রাজ্যসভায় বিল পেশ করছিলেন, তখন গুয়াহাটি, ডিব্রুগড়, জোরহাট, গোলাঘাট, শিবাসাগর, তিনসুকিয়া,বঙ্গাইগাঁও, নওগাঁও ও সনিতপুরে কাঠ ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চলে। পরে ডিব্রুগড়ে ফ্ল্যাগ মার্চ চালায় সেনা।
বিলের প্রতিবাদে পরীক্ষা বয়কট করে পথে নামে পড়ুয়ারা। পরীক্ষা পিছিয়ে দেয় গুয়াহাটি ও ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়। অসমের রাজধানী দিসুপরে যাওয়ার প্রধান রাস্তা গুয়াহাটি-শিলং রোড দিয়ে বড় মিছিল বের করে গুয়াহাটির সব কলেজের পড়ুয়ারা।
দিসপুরে রাজ্যের সচিবালয়ের বাইরে সবথেকে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। রাস্তা অবরোধ করেন পড়ুয়ারা। জি এস রোডের সামনে রাখা ব্যারিকেড ফেলে দেওয়া হয়। জাপান-ভারতের সামিটের জন্য যে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল, তাও ভেঙে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। লাঠি চালানো হয়। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। পরে সন্ধ্যায় সচিবালয় থেকে মেরেকেট ৫০০ মিটার দূরে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় এক কলাম সেনাকে বঙ্গাইগাঁওতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গুয়াহাটির পুলিশ কমিশনার দীপক কুমার বলেন, "আজ সন্ধ্যে ৬টা ১৫ মিনিট থেকে গুয়াহাটিতে কার্ফু জারি করা হয়েছে। স্বাভাবিকত্ব না ফেরা পর্যন্ত কার্ফু জারি থাকবে।"
বিক্ষোভের জন্য একাধিক ট্রেন বাতিল করেছে বা যাত্রাপথ ছোটো করেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ট্রেন চলাচলে বিঘ্নিত হতে পারে এই আশঙ্কায় ১৪টি ট্রেন বাতিল বা ট্রেনের যাত্রাপথ ছোটো করা হয়েছে বা অন্য পথ দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।