অধ্যাপকের যৌন হেনস্থার বিচার চেয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে গায়ে আগুন দেওয়া ছাত্রীর মৃত্যুতে অগ্নিগর্ভ ওড়িশা।বুধবার বিধানসভার বাইরে তীব্র নাটকীয়তা দেখা দিয়েছে। বহু মানুষ বিক্ষভ দেখাতে শুরু করেন বিধানসভার বাইরে।এরমধ্যেই বিক্ষুব্ধ জনতাকে সামাল দিতে বিশাল পুলিশবাহিনী পৌঁছলে পরিস্থিতি ক্রমে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বিক্ষুব্ধেরা। আর তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। যার জেরে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় বিক্ষোভকারীদের। এরপরেই বিক্ষুব্ধ জনতাকে হটাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। ব্যবহার করা হয় জলকামানও। (আরও পড়ুন: 'গতকালের অস্ত্র দিয়ে আজকের যুদ্ধ জেতা যায় না',অপারেশন সিঁদুরের উল্লেখ করলেন CDS)
আরও পড়ুন: আমেরিকা থেকে ভারতে আসছে অ্যাপাচে হেলিকপ্টার, রাতের ঘুম উড়বে পাকিস্তানের
সোমবার রাতে ভুবনেশ্বর এইমসে তরুণীর মৃত্যু পর থেকে বিজেপি শাসিত ওড়িশা কটাক্ষের মুখে পড়ে বিরোধীদের। বিজেডি ও কংগ্রেস একযোগে তোপ দাগতে শুরু করে বিজেপির বিরুদ্ধে। বুধবার বিজেডি কর্মীরা কলেজছাত্রীর মৃত্যুতে প্রতিবাদ জানাতে বিধানসভার সামনে জড়ো হন। বিক্ষোভস্থল থেকে পাওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করছে। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের শেল আক্রমণ ছুঁড়ছে।এই পরিস্থিতিতে ভুবনেশ্বরে রাজ্য সচিবালয়ের লোকসেবা ভবনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।ভুবনেশ্বরে বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের হাতে আটক হন দলীয় কর্মী-সহ বিজেডির সহ সভাপতি দেবী প্রসাদ মিশ্র। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছে বিজেডি। শুধু তাই নয়, এই ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তেরও দাবি জোরালো হতে শুরু করেছে রাজ্যে। (আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্ট হওয়ার তোড়জোড় আসিম মুনিরের? শেহবাজ শরিফ সাক্ষাতে জল্পনা আরও তীব্র)
আরও পড়ুন-'রিল দেখে সময় নষ্ট...,' ভোটার মুখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সতর্ক করলেন ওয়াইসি
অন্যদিকে, বুধবার সকাল থেকেই বালেশ্বরে পথে নেমেছেন বিরোধী দল বিজেডির কর্মী- সমর্থকেরা। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বনধ ডেকেছে তারা। আর এই বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে বালেশ্বরে। দোকান, বাজার, অফিস বন্ধ। রাস্তায় যান চলাচলও থমকে গিয়েছে।জেলার রাস্তায় রাস্তায় বিক্ষোভ চলছ। কোথাও টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন বিজেডির কর্মীরা। নবীন পট্টনায়কের দলের হুঁশিয়ারি, যদি সরকার এই ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ না করে, তাহলে বিক্ষোভের আঁচ রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।বনধ-এর জেরে কলকাতা-চেন্নাই জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রাক।কংগ্রেসের নেতৃত্বে ওড়িশার বিরোধী দলগুলির একটি জোটও প্রতিবাদে ১৭ জুলাই, বৃহস্পতিবার রাজ্যব্যাপী বনধের ডাক দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ঝাড়খণ্ডে এনকাউন্টারে নিহত ২ মাওবাদী, জখম এক কোবরা জওয়ান
গত শনিবার বালেশ্বরের ফকির মোহন অটোনোমাস কলেজের বি. এড. পড়ুয়া ২২ বছর বয়সি ছাত্রী কলেজ ক্যাম্পাসে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল ওড়িশার এইমস হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল। সোমবার রাত ১১.৪৬ নাগাদ মৃত্যু হয় নির্যাতিতার। ছাত্রী আত্মহননের চেষ্টার ১১ দিন আগে কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে চিঠি লিখেছিলেন। সেখানে বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন এবং সতর্ক করেছিলেন যে যদি কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তবে তিনি আত্মহত্যা করবেন। অবশেষে তাই হয়েছে। অধ্যক্ষের অফিসের বাইরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল তরুণীর।
ওই ছাত্রীর বিএডের বিষয় ছিল এডুকেশন। এই বিভাগের প্রধান সমীর কুমার সাহু এবং কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপ ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটির কাছে ১ জুলাই লেখা একটি চিঠিতে তরুণী দাবি করেছিলেন যে সাহুর বিরুদ্ধে তিনি যে অভিযোগ এনেছেন তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি শৃঙ্খলা কমিটি গঠন করা হোক।