মঙ্গলবার সকালে গোরক্ষপুরে রামগড় থানার অন্তর্গত আজাদ নগরে জখম হয়ে মৃত্যু হল বছর আশির এক স্থানীয় পুরোহিতের। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, এ দিন সকালে লকডাউন ভেঙে বাইরে ঘুরে বেড়ানো বাসিন্দাদের ঘরে ফেরত পাঠাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বচসা বাধে। কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন স্থানীয় হনুমান রাম জানকি মন্দিরের পুরোহিত কয়েল ওরফে টিকোরি। অভিযোগ, পুলিশ ঘরছাড়াদের লাঠিপেটা করতে গেলে তিনি বাধা দেন এবং লাঠির ঘায়ে গুরুতর জখম হন।সংজ্ঞাহীন টিকোরি লুটিয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বৃদ্ধকে 'মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে' বলে জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বৃদ্ধের শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল।পুলিশ দেহটি ময়না তদন্তের জন্য বিআরডি মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়ে দেয়। এরপর এলাকায় ফ্ল্যাগমার্চ করে পুলিশবাহিনী। লকডাউন অগ্রাহ্য করে রাস্তায় নেমে প্রলাপ করেন মৃতের স্ত্রী ও আত্মীয়রা। টিকোরির স্ত্রী সুখী দেবী (৭৫) অভিযোগ করেন, 'রাস্তায় ব্যারিেকেড তৈরি করার সময় মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে গেলে দুই তরুণের উপরে ক্ফিপ্ত হয়ে ওঠেন তিন পুলিশকর্মী। ওই দুই তরুণকে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করে তারা। গোলমাল শুনে মন্দির থেকে বেরিয়ে আসেন টিকোরি। পুলিশকর্মীদের তিনি অনুরোধ জানান তাঁর পরিচিত ওই দুই তরুণকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমার স্বামীকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে ক্রমাগত বুকে-পেটে লাথি কষাতে থাকেন পুলিশকর্মীরা। তাঁকে মাটিতে ঘষটে নিয়ে গিয়ে পুলিশভ্যানে তোলার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু মাঝপথেই তিনি জ্ঞান হারান। ভয় পেয়ে গিয়ে বাড়ি থেকে জল নিয়ে তাঁর মুখে ঢালার চেষ্টা করি, কিন্তুত ততক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।'সুখী দেবীর দাবি অগ্রাহ্য করে ক্যান্টনমেন্ট থানার সার্কেল অফিসার সুমিত শুক্লা বলেন, 'লকডাউন মেনে চলার জন্য আবেদন জানালে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বচসা বাধে পুলিশের। কাজিয়া চলাকালীন আচমকা অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন ওই বৃদ্ধ। তাঁকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর দেহ ময়না তদন্তের জন্য মগ্রে পাঠানো হয়েছে।'তবে মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে টিকোরির মৃত্যুর তদন্ত হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। দোষীদের যথাযথ বিচার হবে বলেও শুক্লা আশ্বাস দিয়েছেন।